বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ এবং মৃত্যু যখন গুরুতর আকার ধারণ করেছে ঠিক তখনই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এই প্রবণতা এখনো পর্যন্ত ঢাকা শহরের মধ্যেই বেশি দেখা যাচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, একজন ব্যক্তি একই সাথে কোভিড১৯ এবং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। মশা নিধনের কার্যক্রম জোরদার করতে না পারলে পরিস্থিতি গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসকরা। বাংলাদেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গু জ্বর ও করোনার লক্ষণ এক হলেও পার্থক্য বোঝার উপায় ও করণীয়-
কোভিড ১৯
কভিড-১৯ দীর্ঘ সময় ধরে চলমান এক আতঙ্কময় রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রূপান্তরিত ভাইরাস দুর্বল হতে থাকলেও কিছু ভ্যারিয়েন্ট সক্রিয় ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যেমন ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট।
নিষ্ঠুর বাস্তবতা হচ্ছে একই সঙ্গে একাধিক ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। শুরু থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ানোর কথা বলা হলেও এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না, এমনটা বলা যাচ্ছে না।
লক্ষণ বা বোঝার উপায়:
প্রথমে লক্ষণ হিসেবে জ্বর, শুকনো কাশি, গন্ধ ও স্বাদ না পাওয়া, ডায়রিয়া দেখা গেলেও এখন মাথাব্যথা, সর্দি, গলাব্যথা, দুর্বলতা, চামড়ার কোথাও রং পরিবর্তনসহ নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে নিরাপদ থাকা যায়। বিশেষভাবে কার্যকর মাস্কের সঠিক ব্যবহার। এ ছাড়া করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের বিষয়ে কোনো মতবিরোধে না গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন নিতে হবে।
আসন্ন ঈদে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে কোনো আপস করা যাবে না।
ডেঙ্গি বা ভেঙ্গু :
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ডেঙ্গু বা ডেঙ্গি রোগ পরিচিত হলেও কোভিড নিষ্ঠুরতার সময়ে এর প্রকোপ নতুন করে দু:চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে, ইতিমধ্যে কোভিডের পাশাপাশী ডেঙ্গু রোগীও বাড়ছে। এটিও ভাইরাস জণিত রোগ যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর উপসর্গগুলো দেখা দেয় যেমন জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। ডেঙ্গু ও করোনা উভয় ভাইরাস একত্রে আক্রান্ত করতে পারে আর দুটি রোগকেই সহজ ভাবে নেয়ার সূযোগ নেই, তবে ডেঙ্গু ভাইরাস করোনার মতো ছোয়েচে নয়।
বর্তমান সময়ে যে কোন উপসর্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বিলম্ব করা যাবে না। টেলিচিকিৎসক পরামর্শ এখন জনপ্রিয় হচ্ছে, ইচ্ছা মতো বা অন্য কারো অভিজ্ঞতা থেকে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া জ্বরে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষুধ সেবন নিরাপদ নয়, ডেঙ্গু জ্বরকে কোভিড ভেবে কোভিডের প্রচলিত ওষুধ সেবন অপূরণীয় ক্ষতির কারন হতে পারে । রোগ শণাক্তের মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আসতে হবে আর কখন কোন হাসপাতালে যেতে হবে সে বিষয়েও স্বচ্ছ ধারনা রাখা বান্চনিয়।
পরিসংখ্যান বলে ডেঙ্গু রোগ শহর কেন্দ্রিক, কিন্তু শহর থেকে আক্রান্ত রোগী গ্রামে গেলে বিশেষ করে ঈদের সময় এ রোগ গ্রামেও ছড়িয়ে যেতে পারে।
ডেঙ্গু থেকে বাচঁতে মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে হবে আর তার জন্য এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে সরকার সহ সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, কোন স্হানে যেন তিন চার দিনের বেশী বদ্ধ পানি জমে না থাকে সেদিকে কঠোর নজর দিতে হবে, বিশেষ করে ড্রেন, ফুলের টব, নির্মানাধিন বাড়ি বা যে কোন স্হানে। সচেতনতার মাধ্যমে আমরা রোগ প্রতিরোধে স্বচেষ্ট হই।
ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ
রাজ ডেন্টাল সেন্টার
কলাবাগান বশির উদ্দিন মসজিদ সংলগ্ন, ঢাকা।
যোগাযোগ: ০১৯১১৩৮৭২৯১