টিকা কেনা ও দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। ভারত থেকে টিকা কেনার জন্য অর্থছাড়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি টিকা দেওয়ার জন্য সুই-সিরিঞ্জ ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার কাজও শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানা গেছে।
বাংলাদেশ সরকার, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনবে সরকার। চুক্তি স্বাক্ষরের দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে ৫ ডলার (৪২৫ টাকা) করে।
টিকা কেনার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, টিকা কেনার টাকা ছাড় করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা উদ্ভাবিত টিকার উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। তবে টিকাটি এখনো যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পায়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে অনুমান করে বলা হচ্ছে, টিকাটি খুব শিগগির অনুমোদন পাবে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের একই সময়ে সেই টিকা পাওয়ার কথা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী একাধিক সভায় বলেছেন, জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে দেশে টিকা আসবে।
টিকা বিষয়ে ২৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। ভারতের পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের কারখানা থেকে টিকা প্রথমে দিল্লি বিমানবন্দর হয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসবে। বিমানবন্দর থেকে টিকা নেওয়া হবে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউসে। সেখান থেকে সরকারের ওয়্যারহাউসগুলোতে টিকা যাবে।
টিকা দেওয়ার জন্য সুই-সিরিঞ্জসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ‘করোনার টিকাদান কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
টিকা বিতরণবিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনায় টিকা বিতরণ, সংরক্ষণ, কোল্ড চেইন বজায় রাখার ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতার কথা বলা আছে। সীমাবদ্ধতা দূর করার সরঞ্জাম কেনার কথাও তাতে বলা আছে। সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির একজন কর্মকর্তা গতকাল বলেন, ৫০ শতাংশ কেনাকাটার কাজ শেষ হয়েছে বলা যায়।
ভারতের পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের কারখানা থেকে টিকা প্রথমে দিল্লি বিমানবন্দর হয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসবে। বিমানবন্দর থেকে টিকা নেওয়া হবে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউসে। সেখান থেকে সরকারের ওয়্যারহাউসগুলোতে টিকা যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র বলছে, প্রথম দফায় আসা ৫০ লাখ টিকা ২৫ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। এই তালিকা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করতে চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই কাজে অধিদপ্তরকে সহায়তা করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। তবে এই তালিকা কীভাবে তৈরি হবে বা হচ্ছে, তা এখনো সাধারণ মানুষ জানে না।