কোনো বড় ধরনের এক্সিডেন্টের পর চিকিৎসার সুবিধা, মানসিক সাপোর্ট এবং রোগীর সেবার জন্য রোগীর সঙ্গে আত্মীয়-স্বজন থাকা দরকার। কিন্তু এ সংখ্যা কত হবে তা গুরুত্বপূর্ণ।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হয় রোগীর স্বজনদের। চিকিৎসা শুরু করতে বেশি সময় নিয়ে ফেলায় রোগীর স্বাস্থ্য সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে যেমন হার্ট অ্যাটাক, পুড়ে যাওয়া, অ্যাক্সিডেন্ট ইত্যাদিতে নিজেকে শান্ত রাখুন। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন কীভাবে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। হাসপাতালে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য করার জন্য স্বার্থহীনভাবে (!) এগিয়ে আসবে কিছু মহিলা বা পুরুষ। তারা রোগীকে বাইরের ক্লিনিকে নেওয়ার জন্য তাগাদা দেবে বা রোগীর ভর্তির ব্যাপারে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেবে। এরাই কিন্তু দালাল। এদের হাতে একবার পড়েছেন তো নিস্তার নেই। অখ্যাত কোনো ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে রোগীর বারোটা তো বাজাবেই, সঙ্গে খোয়াবেন টাকা। হাসপাতালে কোনো ‘অনুসন্ধান কেন্দ্র’ খোলা থাকলে ইমার্জেন্সি বা জরুরি বিভাগে যাওয়ার ব্যাপারে তথ্য নিন। সাধারণত হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগটি হাসপাতালের নিচতলায় প্রবেশমুখে থাকে। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ডে জরুরি বিভাগের অবস্থান লেখা থাকে। এর সাহায্যেও খুঁজে নিতে পারেন এ বিভাগটি। এ বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল হক মলি্লক বলেন, ‘কোনো বড় ধরনের এক্সিডেন্টের পর চিকিৎসার সুবিধা, মানসিক সাপোর্ট এবং রোগীর সেবার জন্য রোগীর সঙ্গে আত্মীয়-স্বজন থাকা দরকার। কিন্তু এ সংখ্যা কত হবে তা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাধারণত এক রোগীর জন্য একজন আত্মীয় থাকার অনুমতি দেই। কিন্তু দেখা যায়, এক রোগীর সঙ্গে ১০-১২ জন লোক আসে। এতে রোগীর চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটে, চিকিৎসকরা রোগীর ইতিহাস যাচাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঠিকমতো করতে পারেন না। রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়। একই সময়ে আসা অন্য রোগীদের চিকিৎসা পেতে সমস্যা হয়। কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটলে সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। সংবাদকর্মীদের এমন আচরণে রোগীর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়, ওয়ার্ডের পরিবেশ নোংরা হয়ে পড়ে, রোগীরা ইনফেকশনে আক্রান্ত হন বেশি। তাই এ ব্যাপারে সংবাদকর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে জানান তিনি। ‘ রোগীর চিকিৎসার জন্য রোগের ইতিহাস জানা জরুরি। অসুস্থ ব্যক্তির রোগ সম্পর্কে পুরোপুরি ও ভালো জানেন এমন একজন চিকিৎসককে রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন। অন্যরা বাইরে অপেক্ষা করুন। অযথা কান্নাকাটি না করে রোগীর চিকিৎসায় সহায়তা করুন। টিকিট কাউন্টার থেকে কেটে নিয়ে আসুন টিকিট। চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কিনে আনতে সাহায্য করতে পারেন অন্য একজন। রক্তের প্রয়োজন হলে কেউ দায়িত্ব নিন রক্ত সংগ্রহের। চিকিৎসক যদি রোগীকে অন্য কোনো বিভাগে রেফার করেন তবে দেরি না করে রোগীকে সে বিভাগে নিয়ে যান। সংশিল্গষ্ট বিভাগে কীভাবে যাবেন তা ভালো করে চিকিৎসকের কাছ থেকে শুনে নিন। ইমার্জেন্সি বিভাগে রোগী বহনের ট্রলি পাওয়া যায়। এ ট্রলিতে সংশিল্গষ্ট বিভাগে রোগী স্থানান্তর করুন। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্মচারীর সহায়তা নিতে পারেন। অনেক সময় রোগীর আত্মীয়-স্বজন জরুরি বিভাগের অপারেশন রুমে রোগী দেখতে যান। এতে রোগী ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে পারে। রোগীকে দেখার জন্য দলে দলে হাসপাতালে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে রোগীর চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটে।