সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডা-জ্বর ও গলাব্যথা থেকে দূরে থাকার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় বা চিকিৎসা করতে পারেন। হঠাত্ এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য সর্দি, কাশি, জ্বরের কবলে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এই সময়ে বিভিন্ন ভাইরাল ইনফেকশনে ভুগতে হয় আমাদের। তবে এই জ্বর, সর্দি, কাশির চিকিত্সার বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। যা আপনার রান্নাঘরেই মজুত থাকে।
সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডা-জ্বরের কিছু কার্যকরী টিপস-
১. কাশি হলে বার বার হালকা গরম পানি পান করুন।
২. ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ছেড়ে দিন। তামাক কাশিকে আরো শক্তিশালী করে।
৩. সবসময় উষ্ণ থাকুন। যেহেতু ঠান্ডা কাশির একটি উপলক্ষ তাই কাশি হলে উষ্ণ থাকবেন।
৪. মেন্থল লজেন্স চুষতে পারেন। এটা গলা থেকে কফ গুলোকে বের করতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
৫. কাশি হলে গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। এটা শরীরের ইন্দ্রিয় সমূহ থেকে কাশির জীবাণুগুলোকে বের করে দেয়।
৬. হাত পরিষ্কার রাখতে হবে, হাত না ধুয়ে খাবার খেলে দেহে জীবাণুর সংক্রমণ হয়। ফলে নানারকম রোগ-বালাই দেখা দেয়। সাবান দিয়ে অন্তত ৪৫ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
৭. ভেজা চুল বেঁধে রাখলে ঠান্ডা লাগতে পারে। গোসলের পর চুল শুকিয়ে বাইরে বের হতে হবে।
৮. ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাবেন না। ধুলোবালু এড়িয়ে চলুন। বাইরে গেলে মাস্ক পরে নিন।
৯. নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা পানি ঝরলে সে ক্ষেত্রে গরম পানির ভাপ নেওয়া অত্যন্ত কার্যকরী।
১০. কাশি বা গলাব্যথা হলে লবণ-গরমপানি দিয়ে গার্গল করা উপকারি।
১১. জ্বরের সময় তাপমাত্রা বেশি হলে, বার বার পানি দিয়ে শরীর মোছা ও জলপট্টি অনেক কার্যকর।
১২. এই সময় বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত ঘুম আবশ্যক।
১৩. পুষ্টিকর, সহজপাচ্য, গরম ও তরল খাবার অপরিহার্য।
১৪. আপনার যদি টানা দুই সপ্তাহের বেশি কাশি থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
উপকারি খাবার
* আদা, লেবু ও মধু দিয়ে রং চা।
* যষ্ঠিমধু পানির সাথে ১০মি. গরম করে খাওয়া।
* কাঁচা আদার টুকরা খাওয়া বা মুখে রাখা।
* কালোজিরা ও রসুনের ভর্তা।
* সরিষা ও রসুনের ভর্তা।
* টক ফল ও কাঁচা মরিচ।
* গরম স্যুপ ও গরম পানি খাওয়া।
* মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, দই, বাদাম, বীচি খাওয়া।
* দই দিয়ে চিড়া সাথে কলা।
* ঢেঁকি ছাটা চালের বসাভাত ও নরম সবজি।
* হলুদ মিশ্রিত দুধ।
* সবুজ চা বা তুলসী চা।
* লবঙ্গ, দারুচিনি, আদা, তুলসী, সামান্য লবন ও মধু দিয়ে লালচা।
গরম পানির ভাপ
ফুটন্ত গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। বা ফুটন্ত গরম পানিতে লবঙ্গ, দারুচিনি, আদা, তুলসীপাতা, রসুন ও সরিষা নিন। চুলা থেকে পানি নামিয়ে একটি বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে নিন এবং ঘন ঘন শ্বাস নিন। এভাবে অন্তত ১০ মিনিট করে দিনে ৩ বার ভাপ নিন। এতে বন্ধ থাকা নাক খুলে যাবে এবং বুকে জমে থাকা কফ বের হয়ে আসবে।
লবণ-পানি দিয়ে গার্গল
কাশি দূর করতে এটা অনেক জনপ্রিয় এবং প্রাচীন পদ্ধতি। লবণ- গরম পানি দিয়ে গারগিল করার ফলে গলা অনেক পরিষ্কার এবং আরামদায়ক হয়। এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ লবণ দিয়ে পানি গরম করে নিন। যতক্ষণ না লবণ পানির সাথে একবারে মিশে যায়। এরপর হালকা গরম পানি মুখে নিয়ে ১৫ সেকেন্ড ভালভাবে গড়গড়া করতে থাকুন। দিনে ৩ বার এটা করতে পারেন। ঘুমানোর আগে করলে কাশির কারণে ঘুমের সমস্যা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
সৈয়দা শিরিনা (স্মৃতি)
ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান এবং নিউট্রিশনিস্ট
বিআরবি হসপিটালস লিমিটেড