শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা একটি আবশ্যকীয় বিষয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে নানা ধরনের ভুল ধারণা রয়েছে। এই ভুল ভেঙ্গে নিরাপদ যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন চিকিৎসক নুসরাত জাহান দৃষ্টি। বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো নিরাপদ যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলে নিরাপদ যৌনতা, অভ্যাস যা যৌন সংসর্গ এবং অনুরূপ কার্যকলাপের সময় যৌন সংক্রামিত রোগ, বিশেষত এইডস, সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করাসহ নানা বিষয়ে কনটেন্ট প্রকাশ করছেন। ডা. নুসরাত জাহান দৃষ্টি। ইউটিউব চ্যানেলটির নাম “সেক্স অ্যাডু উইথ ড. দৃষ্টি”।
২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি চ্যানেলটির যাত্রা শুরু করেন তিনি। বর্তমানে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ।
ডা. নুসরাত জাহান দৃষ্টি বলেন, যাত্রাটা এত সহজ নয়। কাজটির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত তাকে মানুষের যন্ত্রণা শিকার হতে হয়। অনেকবারই ভেবেছেন আর কাজ করবেন না। পরক্ষণেই দায়বদ্ধতা থেকে পুনরায় নতুন উদ্যোগে কাজ করা শুরু করেন। নিরাপদ যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে সচেতনতা মূল কাজ করার জন্য তিনি কাজ করে চলেছেন।
ব্যক্তিগত চ্যানেল ছাড়াও কাজ করছেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেমন বাংলাদেশ বেতার, যমুনা টেলিভিশন,গ্লোবাল টেলিভিশন, বিজয় টিভি ইত্যাদি। প্রথম দিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে চিকিৎসা সেবা এবং পরামর্শ দিতেন। একটা সময় খেয়াল করলেন, অনেকেই লোকে তো করে প্রচার করার চেষ্টা করছেন এবং ভুল তথ্য দেয়ার চেষ্টা করছেন।
তখন তিনি চিন্তা করলেন, যদি একটিমাত্র মাধ্যম থেকে তার এই তথ্যগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়, তাহলে একটি নির্ভরযোগ্য জায়গা থেকে সকলেই সঠিক তথ্য পাবেন। মূলত এই উদ্দেশ্যেই ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলটি তৈরি করা। আমাদের দেশে সেক্স কে এখনো ট্যাবু ও স্টীগমা হিসেবে দেখা হয়। যদিও সেক্স আমাদের স্বাভাবিক জীবনের একটা অংশ। শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হলো যৌন স্বাস্থ্য।
চ্যানেলটিতে যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্যের সহজভাবে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া আছে। সম্ভবত বাংলাদেশে এই প্রথম সরাসরি সেক্স অ্যাডু নামে কোন ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেল হলো। যা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং সাহসিকতার পরিচয় বহন করে। শুধুমাত্র ভুল ধারণা থেকে অনেকেই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ব্যক্তিগত চ্যানেলটিতে সেক্সুয়াল হেলথ অ্যাডুকেটর বা সেক্স অ্যাডুকেটর হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি স্বপ্ন দেখেন, বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মস্থল পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে একজন সেক্স অ্যাডুকেটর প্রয়োজন। কেননা বয়সন্ধিকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ সকলে জীবনের কোন না কোন সময় যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যায় ভোগেন।
যেহেতু এই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলা হয় না, তাই সারা জীবন অনেকেই এই সমস্যা নিয়ে ভুগতে থাকেন। অথচ সঠিক ব্যক্তির কাছ থেকে পরামর্শ নিলে তিনি একটি সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারেন।