ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য গ্লোব বায়োটেক তাদের উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন ‘বঙ্গভ্যাক্স’-এর প্রটোকল জমা দিয়েছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে এই প্রটোকল জমা দেওয়া হয়। এই প্রটোকলের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ‘ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল’ চাওয়া হয়েছে।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ আজ রোববার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানান।
ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘গ্লোব বায়োটেকের পক্ষে তাদের সিআরও লিমিটেডে (ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন) প্রটোকল জমা দেয়। বিএমআরসিতে ২০টি ফাইলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল জমা দেওয়া হয়েছে। এই আবেদন অনুমোদন পেলে বিএমআরসি সিআরওকে জানিয়ে দেবে। মূলত সিআরও লিমিটেড এ ট্রায়াল করবে।’
‘তারপর ওই ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল নিয়ে সিআরও লিমিটেড ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে তা জমা দেবে। তারপর সবকিছু ঠিক থাকলে এবং ঔষধ প্রশাসন অনুমতি দিলে আমরা একটি সরকারি হাসপাতালে এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করব। আশা করছি আমরা অনুমোদন পাব এবং সামনে ভালো কিছু হবে,’ যোগ করেন ডা. আসিফ মাহমুদ।
গ্লোব বায়োটেক জানিয়েছে, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএমআরসিতে যান। পুরো প্রটোকল প্রতিবেদনসহ ১০ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি জমা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। আর বিএমআরসির পক্ষে একজন সহকারী পরিচালক তাদের আবেদনটি দুপুর ১২টার পর গ্রহণ করেন।
গত ২৮ ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেককে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনা ভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তারপর থেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
ডা. আসিফ মাহমুদ গত ২৮ ডিসেম্বর এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘গত ডিসেম্বর থেকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠানটি গ্লোব বায়োটেকের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছিল। সব মিলিয়ে আমাদের সক্ষমতা আছে কি না, তা যাচাই করেছে ঔষধ প্রশাসন। সবশেষে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে।’
ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, “গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করা তিনটি ভ্যাকসিনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিক্যাল ক্যান্ডিডেটের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। ওই তিনটির একটি ‘D614G variant mRNA vaccine’। আমরা এই টিকার নাম দিয়েছি ‘বঙ্গভ্যাক্স’। মূলত এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে। স্বাস্থ্যসচিব টিকাটির নাম ‘বঙ্গভ্যাক্স’ করা যায় কি না, সেটা দেখতে বলেছিলেন। তারপর আমরা এই নামকরণ করি।”
গ্লোব বায়োটেকের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার, তা আমরা প্রায় গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আবেদন করব। তারপর তারা আমাদের অনুমতি দিলে ট্রায়াল শুরু করা হবে।’