আগামী ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন প্যানেলে সংগঠিত হচ্ছেন চিকিৎসকরা।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পর পর বিএমএ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে করোনা মহামারীসহ জাতীয় একাধিক কারণে ২০১৬ সালের পর থেকে নির্বাচন হয়নি। তাই এবারের নির্বাচন ঘিরে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।
নির্বাচনে সরকার সমর্থিত প্যানেলের পাশাপাশি বাহার-তুষার প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মাঠে রয়েছে। তবে অন্য কোনো দলের সমর্থিতদের আলাদা প্যানেলের খবর মেলেনি।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী
সরকারদলীয় প্যানেলে সভাপতি ও মহাসচিব পদে কারা থাকছেন তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। এই দুই বড় পদে একাধিক প্রার্থীর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
আলোচনায় রয়েছেন বিএমএ বর্তমান সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান।
আরও রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক তিন ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) নাম। তারা হলেন—অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

মহাসচিব পদে লড়তে আগ্রহী যারা
মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী হিসেবে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন—বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. তারিক মেহেদী পারভেজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া ও দপ্তর সম্পাদক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উল্লাহ।
এ ছাড়াও রয়েছেন স্বাচিপের সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বর্তমান স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ডা. জুলফিকার আলী লেলিন। তবে প্রার্থিতা নিয়ে এ সকল বিষয়ই আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে, নিশ্চিত কিছু নয়। বলা যায়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব নামের বাইরে অন্য কোনো নাম চলে এলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ নেতৃত্ব মনোনয়নে দলীয় সভানেত্রীর চমকও থাকতে পারে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএসএমএমইউ ভিসি—এসব ক্ষেত্রে চমক দিয়েছেন তিনি। এখানেও হয় তো এমন কিছু হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে বিএমএ মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, আমি এবং আমার সংগঠনের কারা নির্বাচন করবে, এ ব্যাপারে এখনো আমরা পরিষ্কার হতে পারিনি। আমি নির্বাচন করবো কিনা, এটা সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা এখন আর ব্যক্তি পর্যায়ে নেই। রাজনীতি করে এমন পরিসরে এসেছি, যেখানে আমার চিন্তার পাশাপাশি সংগঠনেরও চিন্তার বিষয় জড়িত। আমাদের দলের নেত্রীর সিদ্ধান্ত জড়িত। এসবের ওপর নির্ভর করছে আমার নির্বাচনের বিষয়টি। অন্যদের নির্বাচন ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। তবে বিএমএ নেতৃবৃন্দ বসে সিদ্ধান্ত নেবে কারা মনোনয়ন নেবেন। আমরা এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেবো, যারা অতীতে পরীক্ষিত ছিলেন। আগামীতেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন।
‘তবে চিকিৎসকরা কাকে বেছে নেবেন, এটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। প্রার্থী বিজয়ে তারা দেখবেন, ছাত্রজীবনে তার অবস্থান কেমন ছিল, কর্মকালীন ভূমিকা কেমন ছিল। নির্বাচনে এগুলো বিবেচ্য হয়ে যায়’—উল্লেখ করেন তিনি।
বাহার-তুষার প্যানেল
অন্য একটি প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন ডা. শেখ বাহারুল আলম। খুলনা বিএমএ’র এই সভাপতি প্রতিটি স্বাস্থ্য দুর্যোগে সময়োপযোগী পরামর্শ এবং যে কোনো অব্যবস্থাপনায় নির্মোহ ও গঠনমূলক সমালোচনা করেন। যে কোনো সংকটে চিকিৎসকদের পাশে থেকে সব সময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছেন।
এখান থেকে মহাসচিব পদে লড়বেন ডা. আব্দুন নুর তুষার, যিনি সুরক্ষা আইনসহ চিকিৎসকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ ও মত ব্যক্ত করে আসছেন। এই প্যানেল থেকে আর কে কোন পদে প্রার্থী হবেন তা এখনো ঠিক করা যায়নি।
বাহার-তুষার প্যানেলের অঙ্গীকার
তাঁদের তৎপরতায় চিকিৎসক মহল সন্তুষ্ট বলে মনে করেন ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি বলেন, ‘অধিকার ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা উদাসীনতার পরিচয় দেবো—চিকিৎসকরা তা মনে করেন না। আমাদের নতুন করে অঙ্গীকারের কিছু নেই, আমাদের ভূমিকার বিষয়ে দেশের সকল প্রান্তের, সকল চিকিৎসক সমানভাবে অবগত।’
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের সংকটের প্রধান কারণ স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়, তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও মর্যাদার সংকট। রাষ্ট্র এতে যথাযথভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে না। রাষ্ট্রের কাঠামোগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাস্থ্যসেবা, এটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ হওয়ার দাবি রাখে।
ডা. বাহারুল আলম বলেন, বিদ্যমান স্বাস্থ্যব্যবস্থায় প্রয়োজনের বিপরীতে চিকিৎসার অপ্রতুলতা ও ভারসাম্যহীনতা প্রকট। একদিকে চিকিৎসকের তুলনায় রোগী বেশি, অন্যদিকে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা কম।
এই বিএমএ নেতা বলেন, রোগীর চাহিদার আলোকে চিকিৎসকদের যেভাবে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার কথা ছিল, তা করা যায়নি। এই ঘাটতির কারণে চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত জনগণের দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব বাড়ছে। এসবের অবসান হওয়া দরকার।
আলোচনায় বিডিএফ’র ডা. নিরুপম দাশ
আসন্ন বিএমএ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ ডক্টরস’ ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) গভর্নিং বডির সদস্য ডা. নিরুপম দাশ। যিনি চিকিৎসকদের অধিকার আদায়ে কথা বলছেন। একই সঙ্গে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিগ্রহসহ বিভিন্ন সংকটে রাতদিন ভূমি রেখে চলেছেন এই চিকিৎসক নেতা। তাঁর এ তৎপরতা চিকিৎসক মহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
তবে কোন প্যানেল থেকে, কোন পদে নির্বাচন করবেন—এ ব্যাপারে কিছুই বলতে আগ্রহী হননি এই বিডিএফ নেতা।
নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাওয়া সবার
সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিতে নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সহ-দপ্তর সম্পাদক ডা. কাওছার আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, চিকিৎসকদের নির্বাচন নিরপেক্ষ হোক। চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিএমএ। দেশের সকল চিকিৎসক এতে যুক্ত থাকার কথা। দেশে লক্ষাধিক চিকিৎসক আছেন। কিন্তু এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা কত? অর্ধেকেরও কম হবে। নির্বাচনে দেখবেন, সদস্যদের মাত্র ৩-৪০ ভাগ চিকিৎসক ভোট দিতে এসেছেন। তার মানে বিএমএ’র ওপর চিকিৎসকদের একটি আস্থাহীনতা আছে। তারা জোটের প্রতি বিশ্বাস পাচ্ছে না। কেন পাচ্ছে না? তাহলে কী নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে? নির্বাচন কী প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন এক তরফা হচ্ছে? শুধু একটি বিশেষ গ্রুপ বিএমএকে প্রতিনিধিত্ব করছে? যে কারণে নির্বাচনে বেশি চিকিৎসক ভোট দিতে আসছেন না? এখানে অবশ্যই নজর দেওয়া দরকার।’
দৃষ্টান্ত হতে পারে আইনজীবীদের নির্বাচন
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনকে আরও গতিশীল করতে আইনজীবীদের সংগঠন ও তাদের নির্বাচনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন ডা. কাওছার আলম। তিনি বলেন, আইনজীবীদের একটি সংগঠন আছে। সেখানে কোন দল সরকারে আছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বা বিবেচ্য নয়। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে বিভিন্ন দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়, যাদের কেউ সরকারি দলের, কেউ বিপক্ষ দলের। কিন্তু চিকিৎসকদের এই জাতীয় সংগঠনের বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বিরোধীপক্ষ নির্বাচনে আসছে না। এটা সবার জন্য হতাশাজনক। সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে যদি একটি নির্বাচন করা যায়, এবং সকল চিকিৎসক যদি বিএমএ’র সদস্য হয়ে ভোট দিতে আসেন, তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে, সেই বিএমএ সারাদেশের চিকিৎসকদের নেতৃত্ব দিলে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্যাতন বন্ধসহ তাদের দাবি আদায় সহজতর হবে। চলমান দুর্গতি থেকে চিকিৎসকদের রক্ষা করা সম্ভব হবে। তাদের সম্মান ও মর্যাদার যে অবনমন ঘটেছে, সেটা পুনরুদ্ধার হবে।
চিকিৎসকদের কতটা আস্থার বিএমএ?
বিএমএ বর্তমান নেতৃত্বের সমালোচনা করে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, নিজস্ব পরিধির পাশাপাশি বিএমএ’র দলীয় একটা আস্থা থাকতেই পারে, এটা অস্বাভাবিক নয়। তবে সামগ্রিক বিএমএ কখনোই নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারে না। কারণ রোগী সুরক্ষা, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও অধিকার এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে সর্বদা তাঁদের দায়িত্ববান থাকতে হয়। এই জায়গাটায় বিএমএ চলমান নেতৃত্বের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।
বাহারুল আলম বলেন, বর্তমান নেতৃত্বের বিপরীতে গত সাত বছরে আমাদের ভূমিকাও চিকিৎসক মহলের কাছে পরিষ্কার। চিকিৎসকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে আমাদের কোনো কার্পণ্য ছিল না। তাদের যে কোনো ইস্যুর সমাধান কল্পে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসতে বর্তমান নেতৃত্বের হীনমন্যতা ছিল। সমালোচনা করলে তারা আমাদেরকে বিরোধী ভাবেন। অথচ কেবল বিরোধিতা নয়, বরং সমাধানই ছিল আমাদের প্রত্যাশা। ’
বিএমএ’র উদাসীনতায় একাধিক সংগঠনের জন্ম?
ডা. কাওছার আলম বলেন, গত সাত বছর ধরে বিএমএ নির্বাচন হচ্ছে না। এখানেই একটি স্থবিরতা দৃশ্যমান। প্রতি তিন বছর পর পর নির্বাচন হয়। এটি যথাসময়ে হলে সংগঠন শক্তিশালী হতো। নির্বাচন না হওয়া বিএমএ’র নিস্ক্রিয়তার প্রমাণ বহন করে।
‘আরেকটি বিষয় হলো, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন এবং চিকিৎসক নির্যাতন ও লাঞ্ছনা—এসব বিষয়ে তারা নির্লিপ্ত। এর ফলে চিকিৎসকদের ছোট ছোট অনেক সংগঠন তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসকদের সংগঠিত হওয়ার পথে যেগুলো বিরাট অন্তরায়। এই কারণে চিকিৎসক নিগ্রহসহ যে কোনো সংকটে তারা শক্তিশালী প্রতিবাদ কিংবা অধিকার আদায়ে একত্রিত হয়ে আন্দোলন করতে পারছেন না। এতে মূলত তাদের শক্তিই খর্ব হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে দিন দিন চিকিৎসক নিগ্রহ বাড়ছে। সাধারণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে, চিকিৎসকদের নির্যাতন করলে, লাঞ্ছিত করলে কিংবা তাদের সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করলে, কোনো বিচার হয় না। এমনকি এ নিয়ে কোনো আলোচনা কিংবা সমালোচনাও হয় না’—যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সদস্য বাড়ছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বর্তমান মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ডাক্তার সাহেবরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) লাইসেন্সই নবায়ন করেন না, যা না করলে তার চিকিৎসা দেওয়ার নৈতিক অধিকার থাকে না, সেখানেই তার উদাসীনতা; আর বিএমএর সদস্য পদ তো অনেক দূরের কথা। আমরা যদি তাঁদেরকে কিছু বাধ্যবাধকতা দিয়ে দিতাম যে, সদস্য না হলে বিএমএ’র লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারবে না, রেস্টহাউজ ব্যবহার করতে পারবে না, তাহলে এক লাখ চিকিৎসকই সদস্য হয়ে যেতো। এর পরও ১৬ হাজার চিকিৎসক কিন্তু আজীবন সদস্য হয়েই আছেন। এবারও যারা হবেন, তাদের অর্ধেক আজীবন সদস্য হবেন। তার অর্থ হলো, আমাগী বছর আজীবন সদস্য পদ শুরু হবে ২৫ হাজার থেকে। তার মানে ২৫ হাজার সদস্য তো হয়েই গেলো।