Home খাদ্য ও পুষ্টিবয়স্ক মানুষদের খাওয়াদাওয়া কেমন হবে

বয়স্ক মানুষদের খাওয়াদাওয়া কেমন হবে

by স্বাস্থ্য ডটটিভি কনটেন্ট কাউন্সিলর

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই বয়স্ক মানুষদের অনেকেরই খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়। ৬৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দিন দিন কমতে থাকে। এর ফলে তাঁরা নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখে পড়েন।

তাই বয়স্কদের জন্য সঠিকভাবে সুষম ডায়েটের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা জরুরি। ভিটামিন ও মিনারেল-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণ ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন তাঁরা।

করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে সুস্থ থাকতে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়ার প্রতি জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঠিক তেমনিভাবে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা বৃদ্ধদের জন্য সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আর ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোন কোন খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেটিই তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।

বয়স্কদের সুস্থ থাকতে সুষম খাবারের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পড়ুন—
বার্ধক্যে মানুষের খাওয়ার পরিমাণ কমে। তবে সে অনুপাতে ক্যালরির চাহিদা কমে না। বয়স যত বাড়ে, পরিপাকতন্ত্রের হজমশক্তি কমতে থাকে, খাওয়ার রুচিও কমে।

স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর কিছু বিষয় প্রভাব ফেলে, যেমন: দাঁত হারানো। ৭০ বছর বয়সে পৌঁছার পর ২৮ শতাংশ পুরুষ ও ৩৮ শতাংশ নারী প্রয়োজনীয় দাঁত হারিয়ে ফেলেন। ফলে স্বাভাবিক খাবার খেতে তাঁদের অসুবিধা দেখা দেয়।

আবার রুচি কমে যাওয়াটাও একটা বড় সমস্যা। অনেক রকমের ওষুধের প্রভাবে রুচি আরও নষ্ট হয়। বুকজ্বালা, পেটফাঁপা, হজমে গোলমাল ইত্যাদি নিত্য সমস্যায় রূপ নেয়। তার ওপর আছে খাবারে বাছবিচার। কেননা তত দিনে শরীরে ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা ইত্যাদি বাসা বাঁধে। আবার যাঁদের স্মৃতিভ্রম বা ডিমেনশিয়া নামের সমস্যা আছে, তাঁরা বুঝতে পারেন না কী খেয়েছেন বা কী খাবেন। সব মিলিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের অপুষ্টি, প্রোটিনের ঘাটতি, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের অভাব হওয়াটা বিচিত্র নয়। তাহলে পরিবারের বয়স্ক মানুষটির পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থে কীভাবে নজর দেবেন?

  • চিবোতে যেন কষ্ট না হয়, সে জন্য বয়স্ক ব্যক্তিদের খাবার সুসিদ্ধ ও যথেষ্ট নরম হওয়া চাই। সকালে রুটি না খেতে পারলে দুধ-পাউরুটি, পরিজ, ওটমিল, দুধে ভেজা কর্নফ্লেক্স ইত্যাদি বিকল্প হিসেবে দিতে পারেন। চিড়া-কলা-দই, সেদ্ধ ডিম, পেঁপেজাতীয় ফল থাকতে পারে। ফল চিবোতে না পারলে ফলের রস দিতে হবে। শুধু জাউভাত বা খিচুড়িতে প্রোটিন নেই। তাই সেই ঘাটতি মাছ, ডিম, দুধ দিয়ে পূরণ করতে হবে।
  • স্বাদ ও রুচির অভাবে খেতে চান না বলে অনেকে গোঁ ধরেন। এতে শরীরের ওজন কমে, লবণ ও খনিজ উপাদানের ঘাটতি হতে পারে। তাই শিশুদের খাবারের মতোই তাঁদের খাবারে মাঝে মাঝে বৈচিত্র্য আনতে হয়। ভিন্ন ধরনের মসলা, স্যুপ, সস ব্যবহার করে স্বাদ বাড়ানো যেতে পারে। একবারে অনেকটা খেতে পারেন না বলে বয়স্ক ব্যক্তিদের বারবার অল্প করে খেতে দিতে হবে। আর পরিমাণে কম খেলেও খাবারটা যেন যথেষ্ট পুষ্টিকর হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। যেমন: স্যুপ, সবজির তৈরি নাশতা, সবজি বা মাছের চপ ইত্যাদি নাশতা হিসেবে দিতে পারেন।
  • নানা অসুখে আক্রান্ত থাকেন বলে বয়স্ক ব্যক্তিদের অনেক কিছু খেতে নিষেধ। যেমন: মিষ্টি, চিনি, লবণ, চর্বিযুক্ত খাবার ইত্যাদি। ভালো করে জেনে নিতে হবে কোন কোন খাবার তাঁর জন্য ক্ষতিকর। সেগুলো বাদ দিয়ে যথাসম্ভব পুষ্টিকর ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাদ্যতালিকা বানিয়ে নেওয়া উচিত।
  • পরিপাক রসের অভাবে হজমশক্তি কমে যায়। তাই অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার হজম হবে না। বয়স্ক ব্যক্তিদের খাবারে তাই বেশি তেল-মসলা না দেওয়াই ভালো।

You may also like