প্রশ্ন :
আমার কোনো দিন পিরিয়ড হয়নি, যা কিশোরী বয়সে হয়ে থাকে। শুধু এই অস্বাভাবিক বিষয় ছাড়া আমার আর কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। ছোটবেলায় আমার পরিবার আমাকে একবার এই সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল, চিকিৎসক কী বলেছিলেন, জানি না। তবে তারপর আর কোনো দিন আমাকে কোনো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি। বড় হয়ে আমি অনেকবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে চেয়েছি, কিন্তু লজ্জা, অস্বস্তির কারণে যেতে পারিনি। এই শারীরিক সমস্যার নাম কী? এর কোনো প্রতিকার আছে কি?—নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আপনার বয়স এখন কত, তা উল্লেখ করেননি। তবে ১৬ বছর বয়সের পরও যদি পিরিয়ড শুরু না হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। জরায়ু ডিম্বাশয় ঠিক আছে কি না এবং হরমোনজনিত কোনো সমস্যা আছে কি না, দেখার পাশাপাশি, এমনকি ক্রোমোজমাল অ্যানালাইসিস পর্যন্ত করতে হতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বারডেম, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ প্রায় সব সরকারি মেডিকেল কলেজে এন্ডোক্রাইনোলজি বা হরমোন বিভাগ আছে। আপনি দ্রুত নিকটস্থ এ ধরনের কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করুন।
—পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ইন্দ্রজিত প্রসাদ, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।
প্রশ্ন :
আমার বয়স ১৬। চার বছর ধরে আমার দুই পায়ের আঙুল ফেটে যায়। মাঝেমধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপালে যেমনটি হয়, এমনভাবে ফেটে যায়। কখনো আঙুলের ওপর বিচি হয় আর চুলকায়, চুলকানোর পর ফেটে পানি বের হয়। ফাটা স্থানে প্রচুর ব্যথা করে। প্রথম ডান পায়ের একটা আঙুলে ছিল, পরে পায়ের সব আঙুলে ছড়িয়ে গেছে। আমার করণীয় কী?—শোয়েব তাসিন
সম্ভবত আপনার একজিমা হয়েছে। তবে এটা সোরিয়াসিসও হতে পারে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে স্টেরয়েড মলম, প্রয়োজনে মুখে খাবার ওষুধ খেতে হবে। চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন বড়ি খেতে পারেন। তবে অনুমানের ওপর নির্ভর না করে আপনার একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
—পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. আসিফুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, চর্ম বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ।
প্রশ্ন :
আমার বয়স পঁচিশ। আমার মূলত দাঁত ও মাড়িতে সমস্যা। দুই-এক বছর আগে থেকেই ঠান্ডা পানি মুখে নিতে পারি না। শিরশির করে। মাস ছয়েক হলো শক্ত কিছু চিবাতে পারি না। শিরশির অনুভূত হয় এবং এটা বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। শক্ত ও শুকনা কোনো খাবার, যেমন টোস্ট, পেটিস ইত্যাদি খেলে মাড়ি ও তালুর চামড়া উঠে যায়। আগে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁত ব্রাশ করলেও এখন এক থেকে দুই মিনিটে ব্রাশ শেষ করি। করণীয় কী?—নজরুল ইসলাম, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়।
মনে হচ্ছে, আপনি দীর্ঘমেয়াদি পেরিওডোন্টাইটিস (দাঁতের ধারক কলার প্রদাহ) রোগে ভুগছেন। এখান থেকে দাঁত ও হাড়ের বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে কামড়ের সময় ব্যথা অনুভব হয়। অন্যদিকে মাড়ি সরে গিয়ে দাঁতের শিকড় উন্মুক্ত হয়ে যাওয়াতে শিরশির করে।
এ অবস্থায় দেরি না করে দ্রুত একজন দন্ত্য চিকিৎসকের পরামর্শে স্কেলিং ও মাড়ি রোগের চিকিৎসা করিয়ে নিন। খুব সাধারণ এ চিকিৎসার সঙ্গে প্রয়োজনবোধে ওষুধ ও মুখ পরিচর্যার সঠিক নিয়ম মেনে চললে সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে দাঁতের আবরণ বেশি ক্ষয় হয়ে গেলে ফিলিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে।
—পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, প্রতিষ্ঠাতা, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান, ঢাকা।