করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় বেসরকারি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত একটি টেস্ট কিটের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ অসহযোগিতা করছে এমন একটি অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সরকারের ঔষধ প্রশাসন।
প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অসহযোগিতা নয়, বরং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সবসময় সহযোগিতাই করেছে তার অধিদফতর।
করোনাভাইরাসের দ্রুত পরীক্ষা করতে বাংলাদেশের এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি যে র্যাপিড টেস্ট কিট তৈরি করেছে, তা অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক চলছে, তার পটভূমিতে ঔষধ প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখে।
রোববার সংবাদ সম্মেলন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেন যে তাদের উদ্ভাবিত কিটের প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অসহযোগিতা করছে।
কিন্ত ওই অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেন জেনারেল রহমান। তিনি বলেন, অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীর কোনো দেশে র্যাপিড টেস্টের অনুমতি না দেয়ায় বাংলাদেশ এখনো তা ব্যবহার করছে না। তবে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে তা ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসনকে হেয় করায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমালোচনা করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, যুক্তি খন্ডন।
রোববার বিকেলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলনের পর সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, কিট তৈরীতে সব ধরনের সহযোগিতার পরও স্বাস্থ্য বিভাগ ও ওষুধ প্রশাসনকে হেয় করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, অসত্য তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠান ও মানুষকে হেয় করা হচ্ছে। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য পৃথিবীর কোন দেশকে র্যাপিড টেস্টের অনুমোদন দেয়নি। বাংলাদেশ এখন অনুমতি না দিলেও ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কন র্যাপিড টেস্ট অনুমোদন দেয়নি। তবে যেহেতু বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী এটা আবিস্কার করেছেন তাহলে এটা এখন না হলেও পরবর্তীতে এই কিট ব্যবহার হতে পারে।
রোববার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি করেন, নমুনা কিট নিয়ে গেলেও তা গ্রহণ করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। অভিযোগ করেন, ব্যবসায়িক স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে টেস্টিং কিট অনুমোদনের ক্ষেত্রে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে হয়রানি করা হচ্ছে। তবে এই অভিযোগও অস্বীকার করেন ওষুধ প্রশাসনের ডিজি।
রোববার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে দেয়া চিঠিতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সব ধাপ সম্পন্ন করে টেস্টিং কিট জমা দিতে বলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।