গর্ভপাতে প্রতি ঘন্টায় ৩শ শিশুর মৃত্যু!

এর ৯৮ ভাগই মধ্য ও নিম্নআয়ের দেশগুলোতে, যার মধ্যে ৫৯ শতাংশই দক্ষিণ এশিয়ায়। এই তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

বিশ্বে প্রতিবছর গর্ভপাতের কারণে ২৬ লাখ বা দুই দশমিক ৬ মিলিয়ন শিশুর মৃত্যু ঘটে। সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার ১৭৮ শিশুর মৃত্যু ঘটে। সে হিসেবে প্রতিঘন্টায় ২৯৯ জনের বেশি হয়। যাদের গড় বয়স ২৮ সপ্তাহের নিচে। এই মৃত্যুর ৯৮ ভাগই ঘটে থাকে মধ্য ও নিম্নআয়ের দেশগুলোতে।

যার মধ্যে ৫৯ শতাংশই দক্ষিণ এশিয়ায়। এই তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। সম্প্রতি সংস্থাটি ২০১৫ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

সংস্থাটি জানায়, মৃত শিশু জন্মের হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় সাব-সাহারান আফ্রিকায় অন্তত ১০ গুণ বেশি। যেখানে উন্নত বিশ্বে প্রতি হাজারে শিশুমৃত্যুর হার ৩ জন, সেখানে সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে এ হার ২৯ জন। গর্ভপাত বা মৃত্যুর মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় একটি শিশুর মৃত্যুকেও নিষিদ্ধ, কলঙ্কজনক এবং লজ্জাজনক হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গর্ভপাতে ২৮ সপ্তাহ বা এর নিচের বয়সী শিশুদের মৃত্যুর তিন-চতুর্থাংশই ঘটে থাকে দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারে। গর্ভপাতের এই চিত্রের সঙ্গে মাতৃমৃত্যু সম্পৃক্ত। একই সঙ্গে গর্ভকালীন সময়ে দক্ষ ও উপযুক্ত সেবাদানকারী ধাত্রীর উপস্থিতি না থাকার বিষয়টিও এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ২০০০ থেকে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী গর্ভপাতে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ। যা বছরে ২ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৩ দশমিক শূন্য শতাংশ এবং ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।

গর্ভপাতের কারণে শিশুমৃত্যুর যে কারণগুলো উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হল- শিশুর জন্মগত জটিলতা, বেশি বয়সে গর্ভধারণ, গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের শিকার যেমন: ম্যালেরিয়া, সিফিলিস এবং এইচআইভি, মাতৃস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং ডায়াবেটিস, ভ্রূণ বৃদ্ধিজনিত সীমাবদ্ধতা এবং জন্মগত অস্বাভাবিকতা। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. শরিফ যুগান্তরকে বলেন, গর্ভাপাত সংক্রান্ত কোনো পরিসংখ্যান বাংলাদেশের নেই। এ কারণে সুস্পষ্টভাবে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানচেট’-এর ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৩ হাজার ১০০ নবজাতক মৃত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়। ২০০০ সালে এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬০ হাজার ৩০০। ইতঃপূর্বে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অর্থনেতিক অসচ্ছলতা এবং সঠিক জ্ঞানের অভাবে বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি গর্ভবতী মা এখনও অপুষ্টিতে ভোগেন। মা অপুষ্টিতে ভুগলে গর্ভের শিশুও অপুষ্টিতে ভোগে। গর্ভবতী মায়েদের একটি অংশ ডায়াবেটিস রোগে ভোগেন। তারা নানা ধরনের সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। ১৮ বছরের আগেই তাদের বিয়ে এবং গর্ভধারণ হয়ে থাকে। কৈশোরে গর্ভধারণ ও স্বল্প ওজনের কারণে ৪৫ ভাগ নবজাতকের মৃত্যু হয়। বাকি ২৫ ভাগ মারা যায় শ্বাসকষ্ট ও ইনফেকশনে। তাছাড়া যত শিশু জন্মের পর মারা যায়, তার সমপরিমাণ শিশু গর্ভেই মারা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাল্যবিবাহ গর্ভপাত ও নবজাতক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তাদের সন্তান অপুষ্টির শিকার হয়, ওজন কম হয়, ফলে তারা মারা যায়। নবজাতকের মৃত্যুর হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি। এখনও গ্রামে হাসপাতালে গিয়ে বা প্রশিক্ষিত ধাত্রী দিয়ে সন্তান প্রসবের সংস্কৃতি সেভাবে গড়ে ওঠেনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল কমির কাজল যুগান্তরকে বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে কমপক্ষে নবজাতকের বয়স ২৮ সপ্তাহ না হলে তাকে অপরিপক্ব বা অপরিণত শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও আমেরিকায় ২৪ সপ্তাহের শিশুকেও সুস্থভাবে বড় করে তোলার ব্যবস্থা রয়েছে। যেহেতু আমরা ২৮ সপ্তাহের পূর্বে জন্ম নেয়া অপরিণত (ভ্রূণ) শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি না তাই এ বয়সের শিশুর মৃত্যুকে গর্ভপাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব শিশু বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। ডা. কাজল বলেন, আমাদের দেশে শিশু জন্মের উপযুক্ত সময় ৩৭ বা ৩৮ সপ্তাহকেই গণ্য করা হয়। তবে শিশু যদি ৪০ সপ্তাহেও জন্মগ্রহণ না করে তাহলে সেই অবস্থাকে পোস্টটার্ম প্রেগনেন্সি হিসেবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

গর্ভধারণকালীন সময় গর্ভপাতকে শিশুমৃত্যুর একটি সাধারণ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে শিশু স্বাস্থ্যের ওপর কাজ করে এমন সংস্থা ‘মার্চ অব ডেমস’। সংস্থাটি জানায়, গর্ভধারণের হার বিশ্বব্যাপী বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে সাধারণভাবে গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ আগে শিশুর মৃত্যু হলে সেটাকে গর্ভপাত বলে উল্লেখ করা হয়। ২৮ সপ্তাহ বা তার পরে মারা যাওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে বলা হয় মৃত শিশু। সংস্থাটির মতে, প্রতিবছর ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন শিশু গর্ভপাতে মৃত্যুবরণ করে যদিও এই মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য।

আমেরিকার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জেসিকা জুকার নারীদের প্রজনন ও মাতৃমৃত্যু স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ। তিনি এক দশক ধরে এ কাজ করছেন। বলেন, ‘আমি গবেষণায় দেখেছি গর্ভপাতের পর, বেশিরভাগ নারী লজ্জা অনুভব করেন, নিজেকে দোষী ভাবেন এবং তিনি অপরাধবোধে ভুগতে থাকেন।’

The Review

Apple iPhone 9

8.2 Score

A wonderful serenity has taken possession of my entire soul, like these sweet mornings of spring which I enjoy with my whole heart. I am alone, and feel the charm of existence in this spot, which was created for the bliss of souls like mine.

PROS

  • Good low light camera
  • Water resistant
  • Double the internal capacity

CONS

  • Lacks clear upgrades
  • Same design used for last three phones
  • Battery life unimpressive

Review Breakdown

  • Design 9
  • Performance 8
  • Camera 9
  • Battery 7
  • Price 8
Exit mobile version