॥ নিখিল মানখিন ॥ কমিউনিটি ক্লিনিকে নির্ধারিত ৩০ প্রকারের ওষুধের তালিকা টাঙ্গিয়ে দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি সেবাদানকারীদের করণীয় ‘নির্দেশিকা’ কমিউনিটি ক্লিনিকে দেয়া হয়েছে। ওষুধ পাচার ও সেবাদানে অবহেলা করার চেষ্টা করলে তাৎৰণিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়। নির্দিষ্ট তালিকা টাঙ্গিয়ে দেয়ায় ওষুধ কারচুপির সুযোগ থাকবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেশ কিছু ক্লিনিকের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরিপ্রেৰিতে মনিটরিং জোরালো করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের পরিচালক ডা. মাখদুমা নার্গিস জনকণ্ঠকে জানান, রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিতরণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ প্রকারের ওষুধ। ক্যাপসুলের মধ্যে রয়েছে এমোসলিন, ডঙ্সিাইক্লিন। ট্যাবলেটের মধ্যে রয়েছে আলবেনদাজল, এ্যান্টিাসিড, ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট, ক্লোরোফেনিরামিন, কো-ট্রাইমোঙ্াজল, কো-ট্রাইমোঙ্াজল, এরি থ্রোমাইসিন স্টিয়ারেট, ফেরাস ফিউমারেট উইথ ফলিক-এ্যাসিড, হাইয়োসিন বুটিলব্রোমাইট, মেট্রোনিডাজল, প্যারাসিটামল, পেনিসিলিন বি, ভিটামিন বি কমপেস্নঙ্, জিংক ডিসপারসিবল। সিরাপের মধ্যে রয়েছে এমোঙ্িিলন, এমোঙ্িিসলিন পেডিয়াট্রিক ড্রপ, এরি থ্রোমাইসিন ড্রাই সিরাপ বেনজাইল বেনজোয়েট, ক্লোরোফেনিরামিন, প্যারাসিটামল সাসপেনশন, স্যালবিউটামল, ক্লোরোহেঙ্ডিাইন এ্যান্ড কেট্রিমাইড সলিউশন, ক্লোরামফেনিকল আই অয়েন্টমেন্ট, কম্পাউন্ড বেনজোয়িক এ্যাসিড অয়েন্টমেন্ট, জেনটিয়ান ভায়োলেট টপিক্যাল সলিউশন, নিউমাইসিন এ্যান্ড বেসিট্রাসিন অয়নমেন্ট। আরও রয়েছে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি উপকরণ। সরকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল হতে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার ২৫ প্রকারের ওষুধ, ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট ৯১ কোটি টাকার ২৮ প্রকারের ওষুধ সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হয়। আর ২০১১-১২ অর্থবছরের ৪৩০ কোটি টাকার এডিপি বরাদ্দের বিপরীতে ১০৩ কোটি টাকার ওষুধ ক্রয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। তার মধ্যে ৩৫ কোটি টাকার ওষুধ ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম এবং সেবাদানকারীদের করণীয় সম্পর্কে নির্দেশিকা সম্পন্ন করেছে সরকার। নির্দেশিকায় বলা হয়, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) শুক্রবার এবং সরকারী ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যনত্ম উপস্থিত থাকবেন। প্রশিৰণ পাওয়ার পূর্ব পর্যনত্ম স্বাস্থ্য সহকারী এবং এফডবিস্নউএর কাজে সহায়তা করবেন। হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা ক্লিনিক খোলা এবং বন্ধ করা, রোগীর উপস্থিতি রেজিস্টারে নাম তোলা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করাসহ তাদের কর্মপরিধির আওতাধীন এই মুহূর্তে যে সকল কর্মকা- পরিচালনা করা সম্ভব তা করবেন। কমিউনিটি গ্রম্নপের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবেন। সার্বিক প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় অনত্মঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব (প্রতিষেধক টিকাদানসহ) এবং প্রসব পরবতর্ী (নবজাতকের সেবাসহ) সেবা দেবেন। সময়মতো প্রতিষেধক টিকাদানসহ (যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কফ, পোলিও, ধনুষ্টঙ্কার, হাম, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি) শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়। জনগণের জন্য বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণের জন্য ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণ ও সেবা প্রদান করা হয়। ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, কালা-জ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং সেগুলোর সীমিত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। সাধারণ জখম, জ্বর, ব্যথা, কাটা/পোড়া, দংশন, বিষক্রিয়া হাঁপানি চর্মরোগ, কৃমি এবং চোখ, দাঁত ও কানের সাধারণ রোগের ৰেত্রে লৰণভিত্তিক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সংক্রানত্ম বিভিন্ন উপকরণ, যেমন-কনডম, পিল, ইসিপি ইত্যাদি সর্বৰণিক সরবরাহ ও বিতরণ নিশ্চিত করা হবে। জটিল রোগীদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক সেবা প্রদান করে দ্রম্নত উচ্চতর পর্যায়ে রেফার করতে হবে। সদ্য বিবাহিত ও অনত্মঃসত্ত্বা মহিলাদের নিবন্ধিকরণ ও সম্ভাব্য প্রসব তারিখ সংরৰণ করতে হবে। মহিলা ও কিশোর-কিশোরীদের রক্তস্বল্পতা শনাক্ত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রশিৰণ এবং ব্যবস্থাদি থাকা সাপেৰে স্বাভাবিক প্রসব পরিচালনা করা হবে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার ওষুধপত্র ও এমএসআরসহ আবশ্যক দ্রব্যাদির প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় করবেন।