ওসমানী মেডিকেলের ঘটনায় গণগ্রেফতার অব্যাহত

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ঘটনায় গণগ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬৫ শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট জামায়াতে ইসলামী গণগ্রেফতার ও মেডিকেলের ৫ ছাত্রের বহিষ্কারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।গণগ্রেফতারকালে গতকাল র্যাব-পুলিশের অভিযানে আটক ৩১ জনকে কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠান।

র্যাব-৯ সিলেট পায়রা ঝর্নারপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১৩ আসামিকে গ্রেফতার করে। আটককৃতরা হচ্ছেন—আফজাল হোসেন, কুদরতুল ইসলাম, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ শাওন, নজরুল ইসলাম, রাসেল আহমেদ, মো. শিহাব উদ্দিন, রেজাউল করিম, জাহিদুর রহমান, মো. সাখাওয়াত
হোসেন, মো. বাতেন এবং আবুল হাসনাত রাজু।
পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে আটককৃতরা হচ্ছেন—বাহারুল ইসলাম, ওয়াহিদুল ইসলাম, মাহমুদ, সায়েম আল মাসুম, নূরুল ইসলাম, জাকির, মিজান, সানাউল্লাহ সানি, মাসুদ, ইসলাম উদ্দিন। এরা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
উল্লেখ্য, সোমবার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের মধ্যকার সংঘর্ষের জের ধরে দুটি মামলায় ২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জামায়াতের উদ্বেগ : সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় গণগ্রেফতার ও মেডিকেলের ৫ ছাত্রের বহিষ্কারে সিলেট জামায়াত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গতকাল সিলেট মহানগর, জেলা উত্তর ও দক্ষিণ শাখার এক যৌথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট অঞ্চলের দায়িত্বশীল অধ্যাপক ফজলুর রহমান বলেন, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের সৃষ্ট একটি দুঃখজনক ঘটনাকে উপলক্ষ করে তিনদিন ধরে নগরব্যাপী যে গণগ্রেফতার চলছে, তা সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলছে। এর আগে ছাত্রলীগের অন্তর্দলীয় কোন্দলে এমসি কলেজে এক ছাত্রকে খুন করা হলো। তাদের দলীয় সন্ত্রাসে কলেজ বন্ধ হলো। তখন নগরবাসী সন্ত্রাসী-খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশের কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করেনি। এখন ছাত্রশিবির দীর্ঘদিন থেকে ক্যাম্পাসে নির্যাতিত হয়ে আসছে। ক্লাস করতে পারছে না। ক্যাম্পাসে যেতে পারছে না। সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন গেট বন্ধ করে দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করার পরও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গত সোমবারের ঘটনার সূত্রপাত করল তারা আর এখন গণগ্রেফতার ও বহিষ্কার হচ্ছে নিরীহ-নির্যাতিত ছাত্ররা। এ কেমন আইনের শাসন! তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু তদন্ত শুরুর আগেই শিবির কর্মীদের বহিষ্কার করা হলো। এতে কলেজ কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে দলীয় কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী; নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন। তিনি বহিষ্কৃত ৫ ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের সভাপতিত্বে নগর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা দক্ষিণের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা উত্তরের আমির হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, মহানগরী নায়েবে আমির ডা. সায়েফ আহমদ, সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, উত্তর জেলা সেক্রেটারি সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার প্রমুখ।

Exit mobile version