চুল ভাল রাখতে

মুখের অবয়ব এত সুন্দর নয়, রং তত ফর্সা নয়, তাতে কি! আপনার চুল যদি সুন্দর, ঝকঝকে ও উজ্জ্বল হয়, আপনার চেহারার সঙ্গে যদি আপনার হেয়ার স্টাইল মানিয়ে যায় তাহলে আপনি হয়ে উঠবেন অনেক ইম্প্রেসিভ।
যাদের প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়, তাদের চুল রোদের অতি বেগুনি রশ্মি বা উত্তাপের কারণে এবং ধুলা ময়লায় প্রাণহীন হয়ে পড়ে।
এ ছাড়াও দেখা যায় খুশকি, এলার্জি, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রকম সমস্যা। এ সমস্ত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে দরকার চুলের বাড়তি এবং বিশেষ হারবাল পরিচর্যা।
কয়েকটি সাধারণ পরিচর্যা চালিয়ে যেতে পারলে চুল কখনও হঠাৎ নির্জীব হবে না। বরং হয়ে উঠবে আরও সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল

চুল উজ্জ্বল রাখতে
স দু’দিন পর পর চুলের গোড়ায় অলিভওয়েল অথবা খাঁটি নারকেল তেল হাল্কা গরম করে ম্যাসেজ করুন। সপ্তাহে একদিন সম্পূর্ণ চুলে ব্যবহার করম্নন।
স মাসে দুইদিন কেশুত পাতা বেটে ছোট পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করুন। ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
স অলিভওয়েল এবং ছোট পেঁয়াজের রস মিশিয়ে গরম করে নিন। তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করম্নন। ঘণ্টাখানেক পরে শ্যাম্পু করে নিন।

খুশকি হলে
স শ্যাম্পু করার আগে খাঁটি নারকেল তেল অথবা অলিভওয়েল গরম করে পনেরো মিনিট চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করম্নন। তারপর একটা তোয়ালে গরম পানিতে নিংড়ে নিয়ে মাথায় জড়িয়ে দশ মিনিট রাখুন। খুশকি দূর করার জন্য ওষুধযুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
স কাঁচা পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে উপরোক্ত নিয়মে শ্যাম্পু করম্নন।
স লেবুর রস ম্যাসেজ করম্নন। আধাঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করম্নন। সপ্তাহে দুইদিন করম্নন।
স সমপরিমাণ তেঁতুল ও পুরনো গুড় মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগাবেন। বিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার করম্নন।
স প্রতিবার শ্যাম্পু করার সময় নিজের চিরম্ননি ও ব্রাশ সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ডেটল পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

চুল ঘন করতে
স সমপরিমাণ মেথি বাটা, মেহেদী বাটা, কয়েকটি শুকনো আমলকি বাটা ও একটি ডিম ভালভাবে মিশিয়ে প্রথমে চুলের গোড়ায় এবং পরে সম্পূর্ণ মাথায় পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন।
– এক মুঠো দুর্বা ঘাস খাঁটি নারকেল তেলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন তেলটা রোদে রেখে গরম হলে মাথায় ম্যাসেজ করম্নন। এই তেল কোন শিশিতে রেখে দিতে পারেন। পরবতর্ীতে ব্যবহার করার সময় রোদে রেখে আবার গরম করে নিন।
– নারকেল তেল গরম করে নিয়ে তাতে টাটকা জবা ফুল ফুটিয়ে মাথায় ম্যাসেজ করম্নন। এই তেলটাও শিশিতে রাখা যায়।
– এক কাপ মেহেদী বাটা, আধা কাপ চায়ের লিকার, একটি ডিম ও আধা কাপ নারকেলের দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে প্রথমে চুলের গোড়ায় এবং পরে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। ঘণ্টাখানেক রেখে শ্যাম্পু করম্নন। সপ্তাহে একদিন করম্নন।

শ্যাম্পু করার পর চুল চকচকে করতে চাইলে কি করবেন
– শ্যাম্পু করার পর এক কাপ চায়ের লিকারের সঙ্গে এক ফালি লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
স কড়া চায়ের লিকারের সঙ্গে ভিনেগার দিয়ে চুলে ধুয়ে নিলেও চুল চকচক করবে।
– শ্যাম্পু করার পর বেশি করে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। সাবানের ফেনা থাকলে চুল চকচক করবেই না বরং চুলের উজ্জ্বলতা নষ্ট হবে এবং খুশকি হবে।
চুলের স্টাইলের মধ্যেও কিছু সাবধানতা আছে, যা চুলের পরিচর্যার মধ্যেই পড়ে। যেমন সব সময় খেয়াল রাখতে হবে ধাতব ক্লিপ, রোলার, পিন, রাবার ব্যান্ড এসব ব্যবহারে যেন চুলে টান না লাগে। খুব বেশি হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভাল। চুলের একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য বজায় রাখতে চাইলে দুই মাস অনত্মর চুল ট্রিসিং করা প্রয়োজন। অত্যধিক সূর্যকিরণ এবং বৃষ্টি দুটোই চুলের পৰে খারাপ। চুল খোলা রাখাটা আজকের ফ্যাশন হলেও বাইরে বেরম্নবার সময় চুল বেঁধে রাখাই উত্তম। কারণ ধুলা ময়লা চুলকে নিজর্ীব করে ফেলে।
সর্বোপরি, শুধু চুলের বাইরের পরিচর্যা করলেই চলবে না; আপনার খাদ্যে যোগ করম্নন প্রচুর সবজি। প্রতিদিন কমপৰে দুই লিটার পানি পান করম্নন। পাশাপাশি সাপিস্নমেন্ট হিসেবে ভিটামিন বি কমপেস্নঙ্, সি, ই এবং ক্যালসিয়াম খান। এতে সব মিলিয়ে আপনার চুল হয়ে উঠবে ঘন, কালো, রেশমী, কোমল ও দীপ্তিময়। মুখের গড়নের সঙ্গে মিল রেখে করম্নন হেয়ার স্টাইল। চালচলনে থাকুন স্মার্ট। ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন। দেখবেন আপনি হয়ে গেছেন নজরকাড়া সুন্দর।

Exit mobile version