জলবায়ু ও পরিবেশ
সাভার এখন ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’, কেন এই ঘোষণা
মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণের কারণে ঢাকার সাভার উপজেলাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ বা ‘অবক্ষয়িত বায়ু এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এর ফলে আগামী মাস থেকে সাভারে দুই ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি (টানেল কিলন ও হাইব্রিড হফম্যান কিলন) ছাড়া বাকি সব ইটভাটার কার্যক্রম সীমিত করা হবে।
গতকাল পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘বায়ু দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২’-এর ৫ নম্বর বিধি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ কী, কেন এই ঘোষণা
যখন কোনো এলাকার বাতাসে দূষণকারী উপাদানের ঘনত্ব জাতীয় আদর্শ মানের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায় এবং তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, তখন সেই এলাকাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ বা অবক্ষয়িত বায়ু এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সার্বক্ষণিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (ক্যামস) তথ্য অনুযায়ী, সাভারের বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর বস্তুকণার গড় বার্ষিক ঘনত্ব জাতীয় আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি। এই মারাত্মক পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য তীব্র ঝুঁকি তৈরি করায় সাভারকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই ঘোষণার ফলে শুধু ইটভাটাই নয়, সাভারে এখন থেকে খোলা জায়গায় কঠিন বর্জ্য পোড়ানো নিষিদ্ধ হয়ে গেল। একই সঙ্গে, বায়ুদূষণ ঘটাতে পারে এমন কোনো নতুন শিল্পের জন্য অবস্থানগত বা পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানও বন্ধ রাখা হবে এবং দূষণ ঘটায় এমন কার্যক্রমও নিষিদ্ধ থাকবে।
ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের ৫৮ শতাংশের জন্যই দায়ী এর আশপাশের ইটভাটাগুলো। এসব ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যাপক হারে গাছ কেটে কাঠ পোড়ানো হয়, যা একদিকে যেমন বন উজাড় করছে, তেমনই এর বিষাক্ত ধোঁয়া তীব্র স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বরে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, বায়ুদূষণ কমাতে নতুন করে কোনো ইটভাটার অনুমোদন দেওয়া হবে না। তখন তিনি আরও জানিয়েছিলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্রহীন ৩,৪৯১টি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।