নির্বাচিত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান : ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন ২৬১৩, মৃত্যু ১৭২

Published

on

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭২ জনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮৪ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাকি ৮৮ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় মোট ২ হাজার ৬১৩ জন ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৯৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৮২৯ জনকে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৮ জন মারা যান। এ ছাড়া হাসপাতালে ৮৪ জনকে আনা হয় মৃত অবস্থায়।

হাসপাতালে আসা ব্যক্তিদের কী ধরনের আঘাত ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ। প্রথম দিকে ছররা গুলি, পরে বুলেট ইনজুরি, কিছু এসেছেন মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের আঘাত নিয়ে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, নিহতের সঠিক পরিসংখ্যান বলা মুশকিল। কারণ, জরুরি বিভাগ থেকে জোর করে লাশ নিয়ে গেছেন অনেক স্বজন।

Advertisement

পরিচালক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় এখানে আসা রোগীর চিকিৎসা দিতে তাঁদের হিমশিম খেতে হয়েছে। তখন সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নার্সের ছুটি বাতিল করে দিয়ে তাঁদের সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছিল।

১০০ দিনের কর্মসূচি

পরিচালক আসাদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঢাকা মেডিকেলের ১০০ দিনের কর্মসূচিতে ১৫টি ‘করণীয়’ হাতে নেওয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড স্থাপন ও বিনা মূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। অভ্যর্থনা বা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম জোরদার করা। কেবিন সংস্কার করা। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সংখ্যা বাড়ানো। হাসপাতালের কর্মীদের উপস্থিতির হার বাড়ানো ও যথাসময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা। হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা। হাসপাতাল চত্বরে জরুরি বিভাগের সামনে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনের বিশ্রামের বা বসার ব্যবস্থা করা। হাসপাতালের আশপাশের অবৈধ দোকানপাট অপসারণ করা। টিকিট–ব্যবস্থায় ডিজিটাল কার্যক্রম জোরদার করা। দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যক্রম জোরদার করা। রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সম্পর্ক উন্নয়নে আচরণগত পরিবর্তন নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ নেওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া।

পরিচালক বলেন, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে এলোমেলোভাবে বেসরকারি শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স রেখে বেহাল পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হতো। এখন থেকে হাসপাতাল চত্বরে পাঁচ–ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। বাকি সব বাইরে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়ে থাকে, তা বাধ্যতামূলক হাসপাতালে করতে হবে বলে চিকিৎসকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, নাক-কান-গলা রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নুরুল ফাত্তাহ রুমী, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ ফারুক, হাসপাতালের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

Trending

Exit mobile version