অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নতুন ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। এই নিয়োগের মাধ্যমে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান সদ্য পদত্যাগ করা অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগের কথা জানানো হয়। উপাচার্য হিসেবে সায়েদুর রহমান নিযুক্তির মেয়াদ হবে চার বছর।

এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএসএমএমইউর ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) সেলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে আইটি প্রতিষ্ঠা, প্রয়োগ এবং অন্তর্ভুক্তির মূল ব্যক্তি।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন ওষুধ সংক্রান্ত নীতি ও নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের অল্প কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্যতম, যারা সক্রিয়ভাবে জাতীয় ওষুধ নীতি ১৯৮২ সমর্থন করেছিলেন। তিনি সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স, টেকনিক্যাল কমিটি এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফর্মুলারি এবং বাংলাদেশ কোড অব ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটিং প্র্যাক্টিসের অন্যতম লেখক। বিগত ৩২ বছর ধরে তিনি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষকতায় সম্পৃক্ত।

তিনি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সের (বিসিপিএস) আইটি কমিটির চেয়ারম্যান। অ্যাডভারস ইফেক্টিভ ফর ইমিউনাইজেশন, ন্যাশনাল অ্যাডভারস ড্রাগ রিঅ্যাকশন অ্যাডভাইজারি কমিটি এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ইথিক্স রিভিউ কমিটির সদস্যও তিনি। এ ছাড়া ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিক্স কমিটি এবং ন্যাশনাল ফার্মাকোভিজিল্যান্স গাইডলাইন প্রণয়নকারী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল র‌্যাঙ্কিং স্ট্যাটাস ইমপ্রুভমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক সায়েদুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির আপগ্রেডেশন অব ইন্টিবায়োটিক গাইডলাইন, কনট্রাক্ট রিসার্চ অরগানাইজেশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং ইস্ট্যাবলিশবেন্ট অব বায়োব্যাংক ইন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি।

অধ্যাপক রহমান বাংলাদেশ এএমআর রেসপন্স এলিয়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এ ছাড়া বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-ওরডিনেটর অব ফ্লেমিং ফান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

বিএসএমএমইউর নতুন এই ভিসি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পিএইচিডি, এমডি, এমফিল ডিগ্রির জন্য ৪০টিরও বেশি থিসিসের তত্ত্বাবধান করেছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চিকিৎসাবিজ্ঞানে শতাধিক এমডি, এমএস, এমফিল ও থিসিসের পরীক্ষক এবং পর্যালোচক হিসেবেও কাজ করেছেন। তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে পঞ্চাশটিরও বেশি প্রকাশনা রয়েছে।

ডা. সায়েদুর রহমানের গবেষণার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ড্রাগ পলিশি, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসট্যান্স, ফার্মাকোভিজিল্যান্স, ফার্মাকোইকোনোমিক্স, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস, মেডিসিন ইউটিলাইজেশন স্টাডিজ, মেডিকেল ইডুকেশন এন্ড এনিম্যাল স্টাডিজ।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমানকে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) থেকে এফসিপিএস সম্পন্ন করেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইস্ট্যাবলিশ অব ন্যাশনাল এন্টিমাইক্রোবিয়াল কনজাম্পশন মনিটরিং সিস্টেম শীর্ষক প্রকল্পের প্রধান গবেষক ছিলেন।

Exit mobile version