Home প্রধান খবরসোমবার থেকে সীমিত, বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন

সোমবার থেকে সীমিত, বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হবে। এই সময় থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এ ছাড়া অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠানও সীমিত পরিসরে চালু থাকবে।

আর সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে আগামী ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার)। ওই সময়েও শিল্প কলকারখানা লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হতে পারে। এই সময়ে রপ্তানিমুখী কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ব্যাংকিং সেবাও চালু রাখা হতে পারে।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় উপস্থিত একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।

এ অবস্থায় শিল্প কারখানা ও ব্যাংক কি খোলা থাকবে নাকি বন্ধ থাকবে এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিল্প কলকারখানা লকডাউনের আওতার বাইরেই থাকতে পারে। এই সময়ে রপ্তানিমুখী কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ব্যাংকিং সেবাও খোলা রাখা হতে পারে।

সভায় উপস্থিত একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের খবর, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জুন ক্লোজিংয়ের কারণে সোমবারের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া বাজেট অধিবেশন ও বাজেট পাসের কারণে ১ জুলাই থেকে লকডাউন কার্যকর হবে বলে জানান অনেকেই।

লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। এই বিষয়গুলো কাল রোববার স্পষ্ট করা হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

এর আগে গতকাল সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছিল, সোমবার থেকে সারা দেশে সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হবে। এই সময়ে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

ওই দিন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও প্রথম আলোকে বলেছিলেন, আপাতত সাত দিনের জন্য কঠোর এই বিধিনিষেধ পালন করা হবে। পরে প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে। এবার এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে পালনের জন্য পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে থাকতে পারে।

দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও আট দফা বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।

এর মধ্যে আবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ দেয়। সর্বশেষ গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নতুন করে ঢাকার আশপাশের চার জেলাসহ মোট সাত জেলায় সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে।

জেলাগুলো হলো, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ি ও গোপালগঞ্জ। এর মাধ্যমে সরকার রাজধানী ঢাকাকে সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করছে।

এসব চলার মধ্যেই গত বুধবার রাতে সভা করে দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সারা দেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ বা সবকিছু বন্ধ রাখার সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন বলে কমিটি মনে করছে। বৃহস্পতিবার সেটি তারা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়।

You may also like