চিকিৎসা বিদ্যায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পুরস্কারের ভূষিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এবং সহস্রাধিক কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেশব্যাপী সাড়া ফেলে দেওয়া প্রখ্যাত ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে দেশের ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার কথা জানায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
পুরষ্কার প্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বিএসএমএমইউ সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, সরকারের তরফ থেকে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার আমাকে দেওয়া হয়েছে। এ পুরস্কারে ভূষিত হওয়া খুশির খবর। এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমাকে পুরস্কার প্রদানের উপযোগী মনে করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
পুরস্কারে উচ্ছ্বসিত অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া আরও বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই মণিহার আমায় নাহি সাজে। আমার কতটুকু অবদান আছে, জানি না। সরকার যেহেতু উপলব্ধি করে দিয়েছে, সেজন্য আবারও ধন্যবাদ ও কতৃজ্ঞতা জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমার সহকর্মী, যারা করোনায় আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন, এই দুর্যোগ-সংকটে আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন এবং দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করেছেন, এখনও করে যাচ্ছেন, সকল চিকিৎসকের প্রতি এই সুখকর সময়ে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
পুরস্কারপ্রাপ্তির খবরে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, তিনি আমাকে সম্মানিত করেছেন। আমি এ পুরস্কারের জন্য আবেদনও করিনি। কিন্তু সরকার খুঁজে খুঁজে এ রকম একটা বড় পুরস্কার আমার মতো নগণ্য ব্যক্তিকে দিয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানালে কম হবে, আমি সরকারকে সাধুবাদ জানাই।’
চিকিৎসাসেবায় দেশে অনেকে অনেক ভালো কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার মতো ব্যক্তিকে এ রকম পুরস্কার দেওয়ায় অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হবেন। এতে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
১৯৭৭ সাল থেকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে আসছে সরকার। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, অসামান্য আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের জন্য যারা চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন, তাদেরকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। পাশাপাশি শিক্ষা-সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও জনকল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাদের এ সম্মাননায় ভূষিত করে সরকার।
পুরস্কারজয়ী প্রত্যেকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, পাঁচ লাখ টাকার চেক ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম, আবদুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস, মরহুম সিরাজুল হক। চিকিৎসা বিদ্যায় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম এবং সাহিত্য ও স্থাপত্যে পুরস্কার পেয়েছেন যথাক্রমে মরহুম মো. আমির হামজা, মরহুম স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন।
এছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণে পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডাব্লিউএমআরআই)।