হার্নিয়ার উপসর্গ ও করণীয়

মানুষের পেটের ভিতরে খাদ্যনালী মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং এটি বিশ থেকে ত্রিশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। হার্নিয়া এমন একটি পরিচিত রোগ যাতে নাড়িভূড়ির একটি অংশ উদরগ্রাত্র ভেদ করে অণ্ডথলিতে নেমে যায়। অনেকেই আছেন যারা বুঝতে পারে না তাদের হার্নিয়া আছে কিনা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক হার্নিয়ার লক্ষণগুলো-

১. কোষ্ঠকাঠিন্য
হার্নিয়া হলে খাবার হজম হতে বাধা দেয়, তাই এসময় দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্য এতোই ভয়ংকর হয়ে দেখা দিতে পারে যে, অপারেশনও করতে হতে পারে।

২. জ্বর
জ্বর হলেই সচেতন হতে হবে। সব ধরনের জ্বরই কোনো না কোনো রোগের পূর্বলক্ষণ। তবে হার্নিয়ার উপরোক্ত লক্ষণগুলোর সঙ্গে যদি জ্বর থাকে তবে তা ঘাতকের ভূমিকা পালন করতে পারে।

৩. পেশি দুর্বলতা
পেশি দুর্বলতা যেমন আপনার হার্নিয়ার কারণ হতে পারে তেমনি পেশি দুর্বল অনুভব হলেও হতে পারে হার্নিয়ার লক্ষণ। আপনি হার্নিয়ায় আক্রান্ত হলে আক্রান্ত জায়গার আশেপাশের এলাকার পেশি ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে।

৪. বমি বমি ভাব হওয়া
পেটে যদি ঘন ঘন সমস্যা দেখা দেয় অথবা বমি বমি ভাব হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে হার্নিয়া মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে। কোনো রকম দ্বিধা দ্বন্দ্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. পেট ফুলে যাওয়া
হার্নিয়ার সবচেয়ে দৃশ্যমান লক্ষণ হচ্ছে পেটের কোনো না কোনো অংশে ফুলে যাওয়া। এবং সেই ফোলা থেকে ভয়াবহ পেট ব্যথা হয়ে থাকে।

এছাড়াও শরীর নিচু করলে অথবা ভারী কোনো জিনিস বহন করলে যদি পেট ব্যথা হয়, তবে ধরে নিন হার্নিয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি যদি কাশি হয় তাতেও পেট ব্যথা করতে পারে। সেই সঙ্গে যদি পেটের মধ্যে চাপ চাপ অনুভব করেন তাহলেও হার্নিয়ার লক্ষণ হতে পারে।

পরিত্রাণ পাওয়া যাবে যেভাবে
চিকিৎসা ছাড়া হার্নিয়া ভালো হয় না। তবে কয়েক মাস বা এক বছরে হার্নিয়া খুব একটা খারাপ অবস্থায় উপনীত হয় না। অত্যন্ত ব্যথাযুক্ত এক ধরনের হার্নিয়া আছে, যা থেকে তুলনামূলকভাবে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এটি স্বাস্থ্যের জন্যও আশঙ্কাজনক নয়, একে রিডিউসিবল হার্নিয়া বলে। আর এক ধরনের হার্নিয়া রয়েছে যা হতে পরিত্রাণ পাওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য। একে ননরিডিউসিবল হার্নিয়া বলে। এ ধরনের হার্নিয়া জীবনের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ করে যখন উন্মুক্ত অংশে অন্ত্রের কোন অংশ আটকে যায় বা রক্ত চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। অনেক সময় এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সাজার্রির প্রয়োজনও হতে পারে।

করণীয় কি
কর্মতৎপরতা সীমিতকরণ এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর মাধ্যমে সাময়িক স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত বাঁধন বা ট্রাস পরিধানের মাধ্যমেও কিছুটা সাময়িক উপশম লাভ করা যেতে পারে। হার্নিয়া থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় সার্জারি। হার্নিয়া হলে মূলত দুটি কারণে সার্জারি করা উচিত, প্রথমত বিপজ্জনক স্ট্যাংগুলেটেড হার্নিয়া প্রতিরোধ এবং দ্বিতীয়ত ব্যথা নিবৃত্ত করার জন্য, তা না হলে হার্নিয়া আপনার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত করে দিতে পারে। সার্জারিতে ঝুঁকি ও পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, তার পরেও সার্জিক্যাল সেবাসমূহ অপারেশন পরবর্তী সমস্যাগুলো কমায়।

Exit mobile version