জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন

বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেলে কি হয়?

Published

on

শারীরিক সুস্থতায় আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু একজন মানুষের ঠিক কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন তা আমরা সঠিকভাবে জানি না। দীর্ঘ ৪০ বছরের গবেষণার ফলাফল হিসেবে এবার জানা গিয়েছে ঠিক কতটুকু ফাইবার বা আঁশ খাওয়া আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর। শুধু যে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে এই আঁশ তা নয়, একই সঙ্গে শরীরের নানাবিধ অসুখকেও দূরে রাখবে সহজেই। তবে তা গ্রহণ করতে হবে পরিমাণ মতো।

কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া আমাদের জন্য ভালো?

একজন মানুষের কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগেই। আর এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি গবেষণা চালায়। আর এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ পায় ‘দ্য ল্যাঞ্চেট’ জার্নালে। আর এই গবেষণায় দেখানো হয় যে, আমাদের শরীরের ননকমিউনিকেবল বা ক্রনিক ডিজিজগুলো, এই যেমন- হৃদপিণ্ডের সমস্যা, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্রতিরোধে আঁশযুক্ত খাবার বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

এছাড়া ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি অনেক ভালো প্রভাব রাখে। সাধারণত শর্করা ও অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে বটে। তবে এই খাবারগুলোর নেতিবাচক প্রভাব রোধে কোন খাবার আমাদের খাওয়া উচিত এবং কতটা খাওয়া উচিত তা নিয়ে এখন পর্যন্ত খুব বেশি গবেষণা করা হয়নি। এ জন্যই এই গবেষণাটি চালানো হয়। আর এতে দেখা যায়, আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে আঁশযুক্ত খাবার অত্যন্ত ভালো কাজ করে। সাধারণ খাবারের পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে একজন মানুষের ২৫-২৯ গ্রাম আঁশ খাওয়া প্রয়োজন।

এই তথ্য কতটা পরীক্ষিত?

Advertisement

একজন মানুষের কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার প্রতিদিন খাওয়া উচিত তা একদিনে জানা যায়নি। গবেষক রেনল্ড এবং তার কর্মীরা মোট ১৮৫টি স্টাডি নিয়ে গবেষণা করেন। এছাড়া বাড়তি ৫৮টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নিয়েও পড়াশোনা করেন তারা। সেখান উঠে আসে বহু মানুষের ওপরে করা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এজন্য মোট ৪ হাজার ৬০০ জন মানুষকে নিয়োগ দেওয়া হয়। টানা ৪০ বছর পার করে তারপর বেরিয়ে আসে এই তথ্য।

এ ক্ষেত্রে গবেষকরা অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ এবং তাদের অসুখগুলোকে নিয়ে পর্যালোচনা করেন। দেখা যায় যে, বেশিরভাগ মানুষ হৃদপিণ্ডের সমস্যা, স্ট্রোক, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কোলন ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসারসহ নানারকম ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।

এছাড়াও দেখা যায়, যেসব মানুষ দিনে সবচাইতে বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেয়েছে তাদের বাকিদের চাইতে (যারা আঁশযুক্ত খাবার খায়নি) মৃত্যুর সম্ভাবনা ১৫-২০ শতাংশ বেশি।

আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও পরিচিত হলো নানারকম শাক, সবজি, ফল, ডাল ইত্যাদি। এগুলো একজন মানুষের ওজন, স্থূলতা ও নানাবিধ শারীরিক সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে। তবে আঁশ কি মানব শরীরে ভালো ফলাফলই বয়ে আনে? এ ব্যাপারে চিকিৎসকেরা সাধারণত প্রতিদিন ২৯ গ্রাম পর্যন্ত আঁশ খেতে বললেও, এর বেশি খেতে মানা করে থাকেন। তাদের মতে, অতিরিক্ত আঁশ গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ অনেক কমে আসে।

মূলত, আঁশ আমাদের অন্ত্রের অবস্থা ভালো রাখতে, সেখানে লিপিডকে প্রভাবিত করতে এবং গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। আর এজন্যই আমাদের অন্ত্রে এবং এর সঙ্গে জড়িত পুরো শরীর ভালো থাকে। তাই চেষ্টা করুন খুব বেশি না হলেও কিছু কিছু আঁশযুক্ত খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে। এতে করে বাড়তি কোনো সমস্যা ছাড়াই শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন আপনি।

Advertisement

Trending

Exit mobile version