গোড়ালির ব্যথায় করণীয়

হিল পেইন বা গোড়ালি ব্যথা পায়ের ব্যথাগুলোর মধ্যে অন্যতম। কর্মঠ লোকদের দৈনন্দিন কাজকর্ম ও বয়স বৃদ্ধির জন্য গোড়ালি ব্যথা হয়। একজন ব্যক্তি এক মাইল হাঁটলে দুই পায়ে প্রায় ১২০ টন ওজনের সমান স্ট্রেস পড়ে। গোড়ালির হাড় পায়ের হাড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং একে ক্যালক্যানিয়াম বলে। হাঁটতে গেলে পায়ের অংশের মধ্যে গোড়ালিই প্রথম মাটির সংস্পর্শে আসে। পায়ের হাড়ের সমন্বয়ে পায়ের আর্চ বা আকৃতি গঠিত হয়। আর্চ (হাড়) পায়ের শতকরা ৮০ ভাগ দৃঢ় অবস্থা রক্ষা করে। বাকি ২০ ভাগ দৃঢ় অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে প্লান্টার ফাসা, টেনডন, লিগামেন্ট ও পেশি।
হিলের ব্যথার কারণগুলো
প্লিান্টার ফাসার প্রদাহ। হিাই আর্চড বা ফ্ল্যাট পা থাকলে প্লান্টার ফাসাইটিস বেশি হয়। ডিায়াবেটিস রোগীরা প্লান্টার ফাসার প্রদাহে বেশি আক্রান্ত হয়। ক্যিালক্যানিয়াম স্পার (অতিরিক্ত হাড়)। িহাড়ের ইনফেকশন। শিরীরের অতিরিক্ত ওজন। হিাড়ের টিউমার। েিফ্রক্সার অব ক্যালকেনিয়াম (হাড়ের স্ট্রেস ফ্রেক্সার)। ক্যিালকেনিয়াম বার্সার প্রদাহ (বার্সাইটিস)। েিপশির প্রদাহ (টেনডিনাইটিস একিলিস)। েিরটরো একিলিস টেনডন বার্সাইটিস। িপ্লান্টার নার্ভ ইন্ট্রাপমেন্ট। িট্রমা বা আঘাত। িআর্থ্রাইটিস। িইলফিটিং জুতা ব্যবহার করলে। িডিফেক্টটিভ জুতা ব্যবহার করলে।

লক্ষণগুলো ি৩০% ভাগের কম দুই গোড়ালিতে ব্যথা হয়। িবাম হিলে প্রথম ব্যথা হয়। িআট থেকে ১৩ বছরের মধ্যে এবং ৪০ বছরের ঊধর্ে্ব গোড়ালি ব্যথা বেশি হয়। িব্যথা গোড়ালির তলায় বা পেছনে হয়। িবেশিক্ষণ হাঁটা বা দাঁড়ানো যায় না। িসকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথার জন্য পায়ে ভর দেওয়া যায় না। কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে ব্যথা কিছুটা কমে আসে। িঅনেকক্ষণ রেস্টে থাকার পর পা মাটিতে ফেলতে অসুবিধা হয়। িখালি পায়ে হাঁটলে বেশি ব্যথা হয়। িঅসমতল জায়গায় হাঁটা কষ্ট হয়। িগোড়ালি ব্যথার সঙ্গে কখনো পা জলে যায় এ রকম মনে হবে।

করণীয় বা চিকিৎসা
চিকিৎসা প্রদানের আগে রোগীকে শারীরিকভাবে পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করতে হবে । যেমন_ রক্তের সি বি সি, ব্লাড সুগার, সেরাম ইউরিক এসিড, সেরাম আর এ ফ্যাক্টর, গোড়ালির এক্স-রে এবং নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট। িশক্ত জায়গায় খালি পায়ে হাঁটা নিষেধ।

িঅসমতল ও পাথরের উপর হাঁটা থেকে বিরত থাকতে হবে। িউপযুক্ত মাপের জুতা পরিধান করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর জুতা পরিবর্তন করতে হবে। িনরম জুতা বা ইনসোল লাগানো জুতা ব্যবহার করা উচিত। িফ্ল্যাট ফুট হলে আর্চ সাপোর্ট লাগাতে হবে। িপ্রয়োজনে উঁচু হিল ব্যবহার করতে হবে। িগোড়ালি ও টেনডো একিলিসের স্ট্রেসিং ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। িফিজিক্যাল থেরাপি যেমন_ এস ডবি্লউ ডি, এসটি ব্যবহার করা যেতে পারে। িবেদনানাশক ওষুধ সেবন করা। িস্টেরয়েড ইনজেকশন পুশ করলে সাময়িক ব্যথামুক্ত থাকা যায়। িছোট ছিদ্রের মাধ্যমে আর্থ্রোস্কোপ প্রবেশ করিয়ে ক্যালকেনিয়াম স্পার (অতিরিক্ত হাড় ) এবং টিউবেরোসিটি ছোট ছোট টুকরা করে বের করা হয়।

ডা. জি.এম. জাহাঙ্গীর হোসেন
কনসালটেন্ট, হাড় জোড়া, ট্রমা ও আথ্রর্োস্কোপিক সার্জারি
ডিজি ল্যাব মেডিক্যাল সার্ভিসেস, মিরপুর-১০, ঢাকা

Exit mobile version