আপনি জেনে অবাক হবেন যে, চোখের রোগগুলো নারীদেরই বেশি হয়। এসব রোগের মধ্যে শুষ্ক চোখ, গ্লুকোমা, ছানি, বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয়, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও থাইরয়েডজনিত চোখের রোগ অন্যতম।
এসব রোগের কারণ
আয়ুষ্কাল: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে নারীদের আয়ু পুরুষদের তুলনায় একটু বেশি। আর চোখের বিভিন্ন রোগ বয়স বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নারীরা ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত বড় ধরনের কোন রোগে ভোগেন না। অন্যদিকে পুরুষেরা সাধারণত ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এজন্য বয়সকে চোখের বিভিন্ন রোগ হওয়ার একটি প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়।
হরমোনাল কারণ: বয়সন্ধিকাল, গর্ভধারণ মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন নামক হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি: কিছু কিছু জন্মবিরতিকরণ বড়ি দৃষ্টিজনিত সমস্যার জন্য দায়ী। এসব বড়িতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামক হরমোন থাকে যা চোখের রোগের জন্য দায়ী।
রজোনিবৃত্তি বা মেনোপোজ: রজোনিবৃত্তি বা মেনোপজ হল মহিলাদের জীবনের এমন একটি সময় যখন তাদের রজস্রাব (মাসিক) সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। তারা আর গর্ভধারণ করতে সক্ষম থাকে না। এটি সাধারণত ৪৯ থেকে ৫২ বছর বয়সে হয়ে থাকে। এ সময় মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামক হরমোনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মহিলাদের শুষ্ক চোখসহ চোখের অন্যান্য সমস্যাও দেখা দেয়।
অটো ইমিউন রোগ: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন নিজ শরীরের ক্ষতি করে থাকে তখন তাকে অটো ইমিউন রোগ বলে। যদিও এর সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি, কিন্তু ধারণা করা হয় অটো ইমিউন রোগ পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি হয়।
সাধারণত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জগ্রেন্স সিনড্রোম, গ্রেভস রোগ এইসব অটো ইমিউন রোগ চোখকে প্রভাবিত করে। এ রোগের লক্ষণের মধ্যে চোখ লাল হওয়া, চোখে ব্যথা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, চোখে অস্বস্তি অন্যতম।
অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ করা: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষের তুলনায় নারীরা অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ করে থাকে। ওষুধগুলোর মধ্যে ম্যালেরিয়া ওষুধ, অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ, দুশ্চিন্ত কমানোর ওষুধ অন্যতম। এসব ওষুধ চোখের দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে।
লেখক: ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।