একজন নারীর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে পিরিয়ড বা মাসিক বা ঋতুস্রাব। পিরিয়ড প্রকৃতির পক্ষ থেকে নারীদের জন্য একটি উপহার। এটি এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে একজন নারী গর্ভধারণের উপযুক্ত হয়। পিরিয়ডের মধ্য দিয়েই একজন মায়ের জন্ম হয়। পিরিয়ডের সময়টা প্রত্যেক নারীর জন্য বেশ কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং।
প্রতিটি নারীরই এই সময় শারীরিক ও মানসিক কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অনেক ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এর মধ্যে আছে তলপেটের অতিরিক্ত ব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, মাথা ঘোরানো, অ্যাসিডিটি, মুখের অরুচি, বমি বমি ভাব, অস্বস্তিবোধ ইত্যাদি। পিরিয়ডের দিনগুলোতে রক্তক্ষরণের কারণে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি পুষিয়ে এ সময়ে নিজেকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে কিছু খাবার গ্রহণ বেশ জরুরি।
জেনে নিন কোন খাবারগুলো মাসিক চলাকালীন নারীদের উপকারে আসবে এবং কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা ভালো
মেন্সট্রুয়াল বা মাসিক চলাকালে মেয়েদের শারীরিক পুষ্টির চাহিদায় পরিবর্তন আসে। এর কারণ শুধুই হরমোন নয়, মাসিক চলাকালে তাদের দেহ অনেক প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ হারায়। তাই দেহের পুষ্টি উপাদান ঠিক রাখতে মাসিক চলাকালীন সময়ে মেয়েদের ডায়েট চার্ট মেনে চলা উচিত। আসুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো মাসিক চলাকালীন নারীদের উপকারে আসবে এবং কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা ভালো।
যে খাবারগুলো মাসিকের সময় পুষ্টি যোগাবে
- ব্রকলি- মাসিক চলাকালে দেহ যে খনিজ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হারায় তা হলো আয়রণ। ব্রোকোলিতে প্রচুর পরিমানে আয়রন থাকে, এছাড়াও আছে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়ার এবং পটাসিয়াম। মাসিকের সময় এসব উপাদান শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে।
- কলা : কলা একটি সুষম খাদ্য। মাসিকের সময় কলা নারী দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেট : প্রচুর পরিমানে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, এন্টি অক্সিডেন্ট এ ভরপুর থাকে ডার্ক চকলেট। এছাড়াও ডার্ক চকলেট রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। - স্যামন : স্যামন একটি সামুদ্রিক মাছ যাতে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং আরো অনেক প্রোটিন। মাসিক চলাকালীন পেটের পীড়া কমাতে অনেকেই স্যামন খাওয়ার পরামর্শ দেন।
- আদা : আদা সাহায্য করবে তলপেটের ব্যথা কমাতে।
- কমলা ও লেবু : মাসিক চলাকালে যতবেশি ফল খাওয়া যাবে তা স্বাস্থ্যের জন্য ততবেশি উপকারে আসবে।
এ সময়ে দেহ পুষ্টির অভাবে ভোগে। তাই ফলের থেকে উপযুক্ত কিছু হতেই পারে না।
যা খাবেন না
- দুধ : দুধে ল্যাকটোজ এসিড এবং সুগার থাকে যা পেট ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও বমিবমি ভাব, মাথা ঘোরা এধরনের সমস্যার ও সম্মুখীন হতে পারে।
- ক্যান্ডি এবং স্ন্যাকস : ক্যান্ডি ও স্ন্যাকস মন ভালো করে দিলেও এগুলো গ্যাস বা বুক জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে। এজন্য মাসিক চলাকালীন এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
- ক্যাফেইন : অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে ক্যাফেইন মাসিকের সময়কাল বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও ক্যাফেইনের কারণে আরো অন্যান্য সমস্যার দেখা দিতে পারে।
- ঝাল খাবার : পেটের ব্যথা এবং বুকের ভেতর জ্বালা-পোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে ঝাল খাবার।