প্রতিবছর ট্রমা বা দুর্ঘটনার ফলে পৃথিবীতে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়াও সারা জীবনের জন্য শারীরিক বা মানসিক কারণে অক্ষমও হয়ে যান অনেকে। ট্রমা জনিত দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সামান্য কিছু সতর্কতামূলক পদ্ধতি গ্রহণ করা দরকার।
যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হলেও বাংলাদেশে তা পালন করা হয় না। শুধুমাত্র কয়েকটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এ দিবসটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ১২ লাখ মানুষ দুর্ঘটনায় নিহত হন এবং তার পাশাপাশি আহতের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখেরও বেশি। শুধুমাত্র সতর্কতামূলক উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই এই দুর্ঘটনার প্রায় ৫০ শতাংশ এড়ানো যায়। এছাড়া দুর্ঘটনার পর শারীরিক ট্রমা বা অন্য কোনো বড় ধাক্কায় মানসিকভাবে ট্রমার শিকার হলে নিজের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি।
নিচে কিছু করণীয় সম্পর্কে জানানো হল-
– প্রথমত যদি বোঝেন ট্রমার মধ্যে রয়েছেন, তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন।
– সংকটের সময়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। সব দায়িত্ব একা পালন করতে যাবেন না। যতটা দায়িত্ব আপনার পক্ষে পালন করা সম্ভব, ততটাই দায়িত্ব হাতে নিন। এতে আপনার ওপর মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে।
– ট্রমা থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক সম্পর্কে। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটান। দেখবেন নিজেকে অনেকটা চাপমুক্ত লাগছে। কোনও পুরনো শোক বা মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতেও পরিবারের লোকেদের সঙ্গ কাজ করে।
– প্রচণ্ড স্ট্রেস লাগলে চোখ বন্ধ করে রাখুন কিছুক্ষণ। এতে একাগ্রতা বাড়বে। নেগেটিভ এনার্জি থেকে মুক্তি পাবেন। একটা খাতা-পেন নিয়ে আপনার স্ট্রেসের সম্ভাব্য কারণগুলো লিখে ফেলুন। এর ফলে স্ট্রেসের প্রকৃত কারণ আপনি নিজেই খুঁজে বার করতে পারবেন।
– যোগব্যায়াম আমাদের স্বাস্থ্য এবং মনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমাদের মনকে সর্বদা প্রফুল্ল রাখতে যোগব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার। আপনার শারীরিক কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিনিয়ত যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
– অ্যালবাম কিংবা মোবাইল ফোনের ফটো গ্যালারি দেখুন। সেখানে থাকা অনেক পুরনো সুন্দর মুহূর্ত দেখলে আপনার মন ভালো হতে বাধ্য। সে ক্ষেত্রে ট্রমা থেকে সহজেই বেরিয়ে আসা যায়।
– সংকটজনক কোন সমস্যার সময় সব দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেবেন না। নিজের পক্ষে যতটা করা সম্ভব ঠিক ততটাই করুন। না হলে মানসিক চাপ অত্যাধিক বেড়ে যায়।
– ট্রমা থেকে বাঁচতে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিন পরিবারের মানুষ এবং সম্পর্ক গুলিকে। নিজের সারাদিন ব্যস্ততম সময় থেকে কিছুটা সময় বার করে রাখুন পরিবারের জন্য। এর ফলে মনের মধ্যে চলা নানান কাজের চাপ এবং জটিলতার ভার অনেকটা কমে যায়।
– ব্যস্ততার মাঝে প্রচণ্ড অস্থিরতা অনুভব করলে, সাদা কাগজে ছোট্ট একটি বৃত্তের মাঝের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রায় ৩০ সেকেন্ড চেষ্টা করুন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার। এছাড়াও ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারেন। আবার অল্প সময়ের জন্য চোখ বন্ধ করে নাম্বার কাউন্টিং করলেও অনেক সময় স্ট্রেস কমে যায়।
– খুব ক্লান্ত মনে হলে সেই অবস্থায় কখনোই গাড়ি চালানোর দরকার নেই। খুব ব্যস্ততা থাকলেও গাড়ি চালানো নিরাপদ নয়। বাড়িতে কিংবা নিজের গাড়িতে অবশ্যই প্রাথমিক চিকিৎসার সামান্য কয়েকটি জিনিস রেখে দিন।
– গাড়ি চালানোর সময় কিংবা রাস্তাঘাটে চলার সময় অত্যন্ত সতর্কভাবেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করুন।
– সব সময় চেষ্টা করবেন বদ্ধ ঘরে না থাকার। সম্ভব হলে ঘরের জানালা দরজা গুলো খোলা রাখবেন। এর ফলে ঘরের মধ্যে বদ্ধ পরিবেশের ভাব অনেকাংশে হ্রাস পায়।