চোখে ওষুধ দেওয়ার আগে

– রোগীকে জানতে হবে তার চোখের কোনো ড্রপে অ্যালার্জি আছে কি না? আগের অ্যালার্জির ইতিহাস থেকে সেই ড্রপের নাম ডাক্তারকে চিকিৎসা নেওয়ার আগেই জানানো প্রয়োজন।
– চোখের রোগ ব্যতীত অন্য কোনো রোগ আছে কি না (যেমন_ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, হাঁপানি, বাতরোগ ইত্যাদি), তা ডাক্তারকে জানানো প্রয়োজন।
– চোখের চুলকানি বা অ্যালার্জির চিকিৎসা হিসেবে কখনো কখনো ডাক্তার স্বল্প সময়ের জন্য স্টেরয়েড আইড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এতে রোগী অনেক আরাম বোধ করে। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এ ড্রপ মাসের পর মাস ব্যবহারের ফলে রোগীর চোখে ছানি রোগ ও চাপ বেড়ে গিয়ে (গ্লুকোমা) অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
– চোখে সমস্যা হলে অনেকেরই ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ কিনে চোখে ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এতে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমে যায় ও ঘন ঘন চোখে ইনফেকশন হতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে ওষুধ প্রয়োগেও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
– যারা গ্লুকোমা রোগের জন্য চোখের ড্রপ ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে কিছু সাবধনতা আবশ্যক। কারণ বিটাব্লকার জাতীয় চোখের ড্রপ, যেমন_টিমোলোল মেলিয়েট, হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয় ও হৃদরোগীদের অনেক মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাঁপানি, হৃদরোগীদের গ্লুকোমা রোগের চিকিৎসায় অন্য গ্রুপের ওষুধ ব্যবহার প্রয়োজন। এ ছাড়াও ওষুধ প্রয়োগের পর নেত্রনালিতে কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে রাখলে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেকাংশে কম হয়।
– যাদের অ্যাংগেলক্লোজার গ্লুকোমা রয়েছে, কোনো কারণে তাদের চোখে যদি হোমাট্টপিন বা এট্টপিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
– যাদের চোখের ভেতর প্রদাহ বা ইউভাইটিস রয়েছে, সে ক্ষেত্রে পাইলোকারপিন ও ল্যাটানোপ্রস্ট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যায় না। এতে চোখের প্রদাহ বেড়ে যায়।
– আঘাতের কারণে অথবা অন্য যেকোনো কারণে যদি কর্নিয়ায় ঘা হয়, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত স্টেরয়েড ড্রপ ব্যবহার করলে কর্নিয়ার ঘা বেড়ে গিয়ে ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। এতে চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়াও শুষ্ক চোখ, কর্নিয়ার অ্যাব্রাশন, ভিটামিন এ-র অভাবজনিত রোগে স্টেরয়েড ব্যবহার করা ঠিক নয়।

———————-
ডা. শামস মোহাম্মদ নোমান
চক্ষু বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম

Exit mobile version