॥ ই-হেলথ২৪ রিপোর্ট ॥ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় নবজাতকের লাশ তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর না করার দায়ে রাজধানীর সিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আগামী ১১ জুলাই সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আদালতে হাজির হয়ে এ ঘটনায় তার ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ১৪ জুন বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
এক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের এক রিকশাচালকের সন্তান গত ৭ জুন মারা গেলে মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় লাশ না দেওয়ার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদের ভিত্তিতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পরিচালক এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া একটি রিট দায়ের করেন। রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানিতে অংশ নেন। রিটের শুনানি শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তলবের পাশাপাশি রুলও জারি করে।
জারিকৃত রুলে বলা হয়েছে, মারা যাওয়া ওই শিশুর বাবা-মাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না। বিল পরিশোধে ব্যর্থতায় নবজাতকের লাশ তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিনেন্স-১৯৮২ অনুসারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।
রুলের জবাব দিতে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি/সম্পাদক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঢাকার বিভাগীয় পরিচালক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, মোহাম্মদপুর থানার ওসি, সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ মে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার ডিগদা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও রোকেয়া বেগমের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৭ জুন শিশুটি মারা যায়।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, চিকিৎসাধীন সময়ে শিশুটির চিকিৎসা বিল হয় ৪২ হাজার টাকা। শিশুটির মা-বাবা সব টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ লাশ দিতে অস্বীকার করে। পরে বাবা সন্তানের লাশ রেখেই চলে যেতে বাধ্য হন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে ওই শিশুর লাশ দাফন সম্পন্ন করেছে। হাসপাতালের খরচে ওই শিশুর লাশ উঠিয়ে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করতেও আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত আগামী ২০ জুন আদেশের দিন ঠিক করেছে।