স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালে চিকিৎসক বাড়ানো হবে : প্রধানমন্ত্রী

॥ ই-হেলথ২৪ প্রতিবেদক ॥  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসক ও কর্মচারীদের তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলোতে আনুপাতিক হারে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রী ১৩ মে রবিবার ঢাকা সেনানিবাসে ৫ শ’ শয্যার নবনির্মিত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল উদ্বোধনকালে আরও বলেন, ‘আপনারা সঠিকভাবে সেবা প্রদান না করলে হাসপাতাল জনগণের উপকারে আসবে না এবং হাসপাতালকে সেবামূলক কেন্দ্রে পরিণত করার দায়িত্ব আপনাদের।’

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যসেবা খাতের মতো জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণে যথাযাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছতে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল হচ্ছে বেসামরিক ও সামরিক অংশীদারিত্বে প্রথম সেবামূলক প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালটি নির্মাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের ধন্যবাদ জানান। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন যে, পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মাধ্যমে এই হাসপাতালের সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসকসহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিষ্ঠানটিকে সেবাদানের আদর্শ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ তাঁর পূর্ববর্তী সরকারের মেয়াদে তিনি সশস্ত্রবাহিনী মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ওই দিন থেকেই এই কলেজের ছাত্রদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছিল। এই হাসপাতালটি চালুর মাধ্যমে এই প্রত্যাশা পূরণ হলো।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল দক্ষ, সময়োপযোগী ও উচ্চমানের পেশাদার চিকিৎসক সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হাসপাতালটি চালুর ফলে বৃহত্তর ঢাকার উত্তরাঞ্চলের (যেখানে সরকারী হাসপাতাল নেই) ব্যাপক জনগোষ্ঠীর আধুনিক চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সাড়ে তিন বছরে শুধু স্বাস্থ্যখাতে ৩৯ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭৭৩ চিকিৎসক, ১২ হাজার ৭৪১ কম্যুনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, ৬ হাজার ৩৯১ স্বাস্থ্য সহকারী, প্রায় দেড় হাজার নার্স, ১২ হাজার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং ২৫০ টেকনোলজিস্ট রয়েছে।

তিনি বলেন, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সেবার পরিধি বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে। ৯৭টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ৩ হাজার ৯শ’ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে এ সেবা দেয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রফেসর সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল মোঃ আবদুল মুবীন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির, হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক আবদুল করিম খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটকমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মুজিবুর রহমান ফকির, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা ও সশস্ত্র বাহিনী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বিমানবন্দর সড়কের পাশে হোটেল র‌্যাডিসনের বিপরীত দিকে ৬ একর জমির ওপর ২২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০তলা এই হাসপাতালটি নির্মিত হয়।

Exit mobile version