মেরুদণ্ডের হাড়ে ব্যথা : লক্ষণ ও চিকিৎসা

মেরুদণ্ডের হাড়ে ব্যথা : লক্ষণ ও চিকিৎসা
মেরুদণ্ডের হাড়ে ব্যথা : লক্ষণ ও চিকিৎসা
॥ ই-হেলথ২৪ রিপোর্ট ॥  গবেষণায় দেখা গেছে, মেরুদণ্ডের শতকরা ৯০ ভাগ ম্যাকানিকেল সমস্যা হচ্ছে ডিস্ক প্রলাপ্সের কারণে। বেশির ভাগ ডিস্ক প্রলাপ্স ঘাড়ের এবং কোমরের অংশে হয়ে থাকে। সারভাইকেল ৪/৫ ও ৫/৬ এবং লাম্বার ৪/৫ ও লাম্বার স্যাক্রাল ১-এর মধ্যে ডিস্ক প্রলাপ্স বেশি হয়ে থাকে।

ডিস্ক হচ্ছে মেরুদণ্ডের দুটি কশেরুকার মধ্যবর্তী এক বিশেষ পদার্থ। যা মেরুদণ্ডের এক হাড়কে অপর হাড় থেকে আলাদা করে রাখে এবং নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। ডিস্কের ভেতরে থাকে নিউক্লিয়াস পালপোসাস, যা জেলির মতো নরম এবং বাইরের অংশে থাকে অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস। বিভিন্ন কারণে জেলির মতো অংশটি যখন বের হয়ে স্পাইনাল কর্ডে চাপ দেয় তাকেই ডাক্তারি ভাষায় ডিস্ক প্রলাপ্স বলা হয়।

রোগের লক্ষণ : সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলাপ্স হলে ঘাড়ে ব্যথা হবে, ঘাড় নাড়াচড়া করালে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। ঘাড় থেকে ব্যথা মাথার দিকে বা শিরদাড়া বেয়ে নিচের দিকে যেতে পারে। ব্যথার সঙ্গে ঘাড়ে বা হাতে জ্বালাপোড়া, শিনশিন, ঝিনঝিন বা অবস ভাব হতে পারে। অনেক সময় ব্যথা ঘাড় থেকে এক হাতে বা দুই হাতে ওঠানামা করতে পারে। হাত বা আঙ্গুল অবস বা প্যারালাইসিস হতে পারে।

অস্থিরতা ভাব, অনিদ্রা হতাশাগ্রস্থভাব দেখা দিতে পারে। অনেক সময় সমস্যা র্দীঘায়িত হলে চলাফেরা বা দৈনন্দিন কাজে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
লাম্বার ডিস্ক প্রলাপ্স হলে কোমরে ব্যথা হবে, একটু নড়াচড়ায় ব্যথা র্তীব্র থেকে র্তীব্রতর হবে। এক জায়গায় বসে থাকলে বা হাঁটাহাঁটি করলে কোমরে ব্যথা বেড়ে যায়। হাঁচি-কাশি দিলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। কোমর থেকে এক পা বা দু’পায়ের দিকে ব্যথা ওঠানামা করবে।

পায়ে প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে। পায়ের দিকে টানটান ভাব, জ্বালাপোড়া, ঝিনঝিন, শিনশিন, কামড়ানো মনে হতে পারে। এভাবে চলতে থাকলে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গিয়ে কুঁজো হয়ে যায়। অনেক সময় কোমর ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এভাবে চলতে থাকলে রোগী এক সময় পঙ্গুত্ব বরণ করে।

রোগের চিকিৎসা : যাদের এ জাতীয় সমস্যা দেখা দেয় তাদের যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রোগ নির্ণয় করতে হবে। এমআরআই করে সহজেই ডিস্ক প্রলাপ্স শনাক্ত করা যায়। ডিস্ক প্রালাপ্স হলে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে ডিস্ক প্রলাপ্স থেকে ভালো হওয়া যায়। তার জন্য রোগীকে ২/৩ সপ্তাহ ক্লিনিকে ভর্তি থাকতে হয়। পাশাপাশি ডিস্ককম্প্রেশন থেরাপি, ইন্টারফেরেনশিয়াল থেরাপি, অটোট্রাকশন ডিস্ক প্রলাপ্সে অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা। অপারেশনে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। দেখা গেছে বেশির ভাগ ডিস্ক প্রলাপ্সের রোগী ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি নিয়ে সুস্থ আছেন।

ডা. মোঃ সফিউল্যাহ্
চেয়ারম্যান, ডিপিআরসি

Exit mobile version