ধূমপায়ীদের জন্য আরও দুঃসংবাদ নিয়ে এলেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীরা অতিমাত্রায় শারীরিক যন্ত্রণায় ভোগেন অধূমপায়ীদের তুলনায়।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউসিএলের জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বিবিসির একটি অনলাইন জরিপে অংশ নেয়া লোকজনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি করা হয়েছে।
জরিপে ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ অংশ নেন। গবেষণায় জানা যায়, যারা ধূমপান করেন, এমনকি যারা আগে ধূমপান করতেন এবং এখন ছেড়ে দিয়েছেন, তারাও অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করেন।
গবেষণায় অংশ নেয়া লোকজনকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. কখনও নিয়মিত ধূমপান করেননি
২. একসময় নিয়মিত ধূমপান করতেন
৩. বর্তমানে নিয়মিত ধূমপান করেন।
এই তিন শ্রেণির লোকজনের শারীরিক যন্ত্রণার পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় এবং পরে তাদের উত্তরের ভিত্তিতে তৈরি করা শূন্য থেকে ১০০ পর্যন্ত একটি স্কেলে সেই উত্তর বসানো হয়।
যারা কখনও ধূমপান করেননি, তাদের চেয়ে বর্তমান ও সাবেক ধূমপায়ীরা গড়ে ১ থেকে ২ পয়েন্ট বেশি পান, অর্থাৎ তাদের শারীরিক যন্ত্রণার হার অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি।
গবেষকদের একজন ডক্টর ওলগা পারস্কি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গবেষণার প্রধান আবিষ্কার হলো– সাবেক ধূমপায়ীরাও অপেক্ষাকৃত বেশি শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে জীবনযাপন করেন।’
ধূমপানের সঙ্গে শারীরিক যন্ত্রণার সম্পর্কের কী কারণ তা এখনও নিশ্চিত না বিজ্ঞানীরা।
একটি ধারণা রয়েছে, সিগারেটে যে কয়েক হাজার ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি টিস্যুর ক্ষতি করে, যার ফলে শরীরে ব্যথা তৈরি হয়।
সুতরাং এমন হতেও পারে যে, যে ধরনের মানুষের ব্যথার কথা প্রকাশ করার সম্ভাবনা বেশি, সেই ধরনের মানুষের ধূমপায়ী হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
তবে গবেষক ড. পারস্কি বলছেন, শরীরে তীব্র ব্যথা এবং পিঠে ব্যথার সঙ্গে ধূমপানের সম্পর্ক আছে, গবেষণায় এর আগেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। ধূমপানের ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ ছাড়াও অন্ধত্ব, বধিরতা, ডায়াবেটিস, স্মৃতিভ্রম ও বন্ধ্যত্ব হতে পারে। এ ছাড়া অপারেশন হওয়ার পর ধূমপায়ীরা সেরে উঠতে অধূমপায়ীদের চেয়ে বেশি সময় নেয়।
সূত্র : বিসিসি।