নাসিরনগর স্বাস্থ্য কমপেক্সে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

॥ ই-হেলথ২৪ ডেস্ক ॥  নাসিরনগর উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্য কমপেক্সটির বেহাল দশা। শুধু নামেই ৫০ শয্যার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও চিকিৎসাসেবা ও জনবল বাড়েনি।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স সংকটসহ প্রয়োজনীয় জনবল ও আধুনিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে ।

সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে ২০০৭ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ১১ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে । মাত্র ৯ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা মিলে না এ উপজেলার মানুষের।

যদিও অপারেশন থিয়েটার রয়েছে কিন্তু সার্জারি চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের অপারেশন করা বন্ধ রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। এ কারণে অপারেশন থিয়েটারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক নেই। এখানে আট বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নেই। সমপ্রতি নতুন এক্স-রে মেশিন আসলেও প্রতিস্থাপন ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টয়ের (রেডিওগ্রাফি) অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না।

আরও অভিযোগ রয়েছে, যে কয়জন ডাক্তার কর্মরত আছেন তাদের মধ্যে কতিপয় ডাক্তার বিএমএ’র নাম ভাঙিয়ে প্রায়ই হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকেন। কতিপয় ডাক্তারের প্রায়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে এবং তাদের একাধিকবার শোকজ করা হলেও কোন পরিবর্তন হচ্ছে না বলে একটি সূত্র জানায়।

ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে প্রয়োজনীয় ডাক্তার না পেয়ে দরিদ্র রোগীদের যেতে হচ্ছে জেলা সদরে। শহরের দালাল ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের।

উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১টি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে গুনিয়াউক পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ফান্দাউক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ ৮টি পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৩টিতে ডাক্তার থাকলেও তাদের পাওয়া রোগীদের ভাগ্যের ব্যাপার। ফলে গ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ বাড়ির কাছে চিকিৎসা কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও বছরের পর বছর চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একমাত্র গুনিয়াউক পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা জরাজীর্ণ। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মূল ভবনসহ আবাসিক ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আস্তর খসে পড়ছে।

এছাড়াও বেশ কিছু স্বাস্থ্য পরিদর্শক, এমএলএসএস, মালি, নিরাপত্তা প্রহরীর পদ শূন্য রয়েছে । এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ জিয়াউল ইসলাম সেলিম জানান, কয়েকজন কনসালট্যান্ট ডাক্তার প্রয়োজন। বিশেষ করে সার্জারি ও এনেসথেসিয়ার ডাক্তার থাকলে অপারেশনসহ অন্যান্য কাজ চালানো যেত।

Exit mobile version