কুড়িগ্রামে সোয়াইন ফ্লুর প্রকোপ, আক্রান্ত ১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৪ জন শিক্ষার্থী সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের দেহে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস (এইচ-১এন-১) শনাক্ত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন রিয়াজুল ইসলাম গতকাল বুধবার সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শ্রেণীকক্ষকে হাসপাতালের অস্থায়ী ওয়ার্ড বানিয়ে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন দাবি করেন, সবাই এখন সুস্থ আছে।

এদিকে ২০০৯ সালের পর নতুন করে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। সদর হাসপাতালের রোগী, নার্স, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা গেছে। তবে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, উদ্বিগ্ন বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা মৌসুমি ফ্লুর মতোই। এর চিকিৎসা আছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০ এপ্রিল রাত থেকে নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি, বমি, গলাব্যথা ও পেটের পীড়া দেখা দেয়। এক দিনের মধ্যে ৫৩ জন আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়ে তিন সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের কাছে রোগটি অজ্ঞাত হওয়ায় সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে আইইডিসিআরকে ঘটনা জানানো হয়।
রোগটি সম্পর্কে জানতে আইইডিসিআর ১২ এপ্রিল ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল কুড়িগ্রাম পাঠায়। অনুসন্ধান দলের সদস্য এসে আক্রান্ত রোগীদের কফ, মুখের লালা, নাকের সর্দি, রক্তের নমুনা ঢাকায় নিয়ে যান। সেসব নমুনা পরীক্ষা করে আইইডিসিআর বলছে, ১৪ জন সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসে (এইচ-১এন-১) আক্রান্ত।
গতকাল নার্সিং ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায় একটি কক্ষে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের রাখা হয়েছে। নার্স প্রশিক্ষক শান্তি রানী জানান, ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী নার্সের সংখ্যা ৯১ জন। এর মধ্যে ৮৯ জন আবাসিক। ১৯টি কক্ষে ৩৮ জন থাকার কথা। আবাসনসংকটের কারণে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে অনেকের সর্দি-কাশি হলে তাঁদের ওপর নজর রাখা হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের ক্লাস, পরীক্ষা ও হাসপাতালের কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম ডেপুটি সিভিল সার্জন লোকমান হাকিম বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে আক্রান্ত ১৪ জনকে একটি কক্ষে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সচেতন হলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

Exit mobile version