ডা. এবিএম আবদুল্লাহ
আমাদের দেশে অপচিকিৎসা, কুচিকিৎসার সঙ্গে ভুয়া চিকিৎসক ও হাতুড়ে ডাক্তারের ছড়াছড়ি। অপচিকিৎসার ফলে লাখ লাখ লোক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি অসংখ্য ধুঁকে ধুঁকে মরছে। নকল ভেজাল ক্ষতিকর ওষুধের নাম করে অবাধে বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই। ফলে সারাদেশে চলছে ওষুধ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক চরম নৈরাজ্য। দেশজুড়েই চিকিৎসার নামে চলছে নকল ভেজাল ক্ষতিকর ওষুধের নামে আজগুবি বস্তুর সমাহার, প্রতারিত হচ্ছে জনগণ।
এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি বা অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিশ্বের সর্বত্রই স্বীকৃত। গাছ গাছড়ার ভেষজ চিকিৎসা থেকে শুরু করে আকুপাংচার, হাইড্রোথেরাপি, এরোমাথেরাপি ইত্যাদি ব্যতিক্রমী চিকিৎসা বিভিন্ন দেশে চালু আছে। হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ কিংবা ইউনানী পদ্ধতিতে চিকিৎসা তো অনেক দেশে সরকারীভাবে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেই দেয়া হয়। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য রোগীকে সুস্থ করা, তা সম্ভব না হলে উপসর্গগুলো কমানো এবং অবশ্যই কোন ক্ষতি না করা। তাই যে পদ্ধতিতেই চিকিৎসা দেয়া হোক না কেন, তার পেছনে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকা জরুরী। ভেষজ চিকিৎসা হলেও তা যথাযথ হতে হবে, এর পেছনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, মনগড়া যা খুশি তাই করার সুযোগ কারও নেই।
আমাদের দেশেও এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি চালু আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একই সঙ্গে চালু আছে অপচিকিৎসা। বিশেষ করে ভেষজ বা হারবাল চিকিৎসার নামেই এসব অপচিকিৎসা করা হয় বেশি। রাসত্মার ফুটপাথ থেকে শুরু করে অলিতে গলিতে গজিয়ে ওঠা এক-দুই রুমের ‘চেম্বার’ থেকে এসব চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা প্রদানকারী ‘চিকিৎসক’ নিজেকে নানা রকম আজগুবি উপাধিতে ভূষিত করেন। নিজেকে ডাক্তার দাবি করলেও এদের সিংহভাগেরই ন্যুনতম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ্ঞানটুকুও নেই। তবে মানুষকে ঠকানোর জন্য যথেষ্ট ফন্দিফিকির তাদের জানা থাকে। তাই কেউ কাল্পনিক স্থান থেকে চিকিৎসা শিখে আসার দাবি করেন, কেউবা বংশ পরম্পরায় চিকিৎসা জ্ঞানসম্পন্ন হিসেবে পরিচয় দেন, কেউ ধর্মগ্রন্থকে জ্ঞানের উৎস হিসেবে দাবি করেন, কেউবা শ্রেফ স্বপ্নেই ওষুধের সন্ধান পেয়ে যান। এমনও দেখা যায় যে বড় কোন ওলিউলস্নাহর নাম ব্যবহার করে তার কাছ থেকে প্রাপ্ত ওষুধ হিসেবে চালিয়ে দেন। দেখা যায়, কোন এক পীর স্বপ্নে অলৌকিক শক্তি পেয়ে গেছে, পানি বা তেলে ফুঁ দিয়ে তা পান করলেই যেকোন রোগ দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে। এমনকি ক্যান্সার, হৃদরোগ, খোড়া ল্যাংড়া অচল মানুষও সুস্থ হয়ে উঠবে। তাদের কথিত আসত্মানায় অসংখ্য মানুষ বাড়তে থাকে এবং আস্তানা ঘিরে গড়ে ওঠে নানা ব্যবসাকেন্দ্র। এই ঝাড়-ফুক দিয়েই প্রতারক চক্র হাজার হাজার মানুষকে প্রতারিত করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
দেখা যায় ফুটপাথ বা রাস্তার ধারে বৃত্তাকার লোকের জটলা, মাঝ থেকে মাইকে কারও গলা ভেসে আসছে। নানা অঙ্গভঙ্গিতে আকর্ষণীয়ভাবে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ এবং সর্বরোগ নিরাময়কারী ওষুধের কথা বলে যাচ্ছে। তার সামনে হরেক রকমের গাছের বাকল, শেকড়, ফল বা কোন প্রাণীর অঙ্গবিশেষ। লোকজনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার কথা শুনছে। এ ধরনের দৃশ্য ফুটপাথ থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জ, হাটবাজার, লঞ্চ বাস রেলস্টেশন সর্বত্রই একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কেউ কেউ এমনভাবে উপস্থাপন করেন বা বলেন যে গাছ গাছড়া সব আলস্নাহর দান, এর মধ্যে আল্লাহ নিরাময়যোগ্য এমন কিছু রেখেছেন যে উপকার পায় না এমন লোকই পাওয়া যাবে না। মৃতু্য ছাড়া সব রোগের চিকিৎসাই আলস্নাহ তায়ালা গাছ গাছড়ার মধ্যে রেখেছেন। অনেকে এভাবে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন যে নির্দিষ্ট সময়ে আপনার রোগ ভাল করতে না পারলে পুরো ওষুধের টাকাটা ফেরত দিয়ে দেব, এমনই গ্যারান্টি দিচ্ছি। এ ধরনের চটকদার কথাবার্তায় বা বিজ্ঞাপন দিয়ে সরল মানুষকে বিভ্রানত্ম করে ওষুধ কিনতে বাধ্য করায় এসব অপচিকিৎসাকারীদের কোন জুড়ি নেই। নিত্য নতুন পন্থায় তারা তাদের পণ্যের প্রচার চালিয়ে যায়। ফুটপাথে মাইক দিয়ে নানা কথার তুবড়ি ছুটিয়ে এসব ব্যবসা চলে, পণ্য বিক্রি করা হয় বাসে, রেলস্টেশনে, মার্কেটে, মেলায়। প্রচারণা চালানো হয় লিফলেট দিয়ে, এসব লিফলেট আবার চলতি গাড়ির ভেতরে ছুড়ে ফেলা হয়। এছাড়া পোস্টার, সাইনবোর্ড তো আছেই। এসব প্রচারণায় তারা যে শুধু সুচিকিৎসার দাবি করে তাই নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ১০০ ভাগ সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। এভাবে সমাজের নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের তারা প্রলোভন দেখায়। এমনকি কেবল টিভি, ডিভিডির বা পত্রপত্রিকার মাধ্যমেও বড় বড় বিজ্ঞাপন এমনকি আকর্ষণীয় ছবির মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে সুশিক্ষিত মধ্যবিত্তদের, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে উচ্চবিত্তদেরও ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।
বিভিন্ন শ্রেণীর গ্রাহককে বিভিন্ন পন্থায় আকর্ষণ করা হচ্ছে। কাল্পনিক রোগ আবিষ্কার করে, মানব দেহের স্বাভাবিকতাকে অসুখ হিসেবে প্রচার করে সেসবের ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। মূলত স্বল্প শিক্ষিত যুবক যুবতী যারা নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাদের এভাবে আকর্ষণ করা হচ্ছে। আবার যারা ধর্মভীরু তাদের ফাঁদে ফেলতে প্রচারণা চালানো হয় টুপি দাড়ি পরা কাউকে দিয়ে, মহিলাদের জন্য বোরখা ঢাকা নারীদের দিয়ে। অন্যদিকে যারা আধুনিক হিসেবে নিজেকে দেখতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য একই পণ্য প্রচার হয় ভিন্ন আঙ্গিকে, দেখা যায় স্যুট টাই পরা কেউ তথাকথিত বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে পণ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করছেন। মানুষের মানসিক দুর্বলতা বা অনুভূতিকেও এরা চতুর পন্থায় ব্যবহার করে থাকে। ক্যান্সারে বা অন্য কোন জটিল অসুখে আক্রান্ত মৃতপ্রায় রোগীর স্বজনের অসহায়ত্বকে ব্যবহার করতে ‘জীবনের শেষ চিকিৎসা’ জাতীয় সেস্নাগান ব্যবহার করে থাকে। নিঃসন্তান দম্পতিদের মানসিক যাতনাকে পুঁজি করে তাদের সহজেই প্রতারিত করতে সক্ষম হয়। এমনকি অনেক উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরাও এভাবে প্রতারিত হন। তবে এসব অপচিকিৎসা কেন্দ্রের প্রতারণার মূল লক্ষ্য থাকে দরিদ্র শ্রেণীর শিক্ষার আলোবিহীন মানুষজন যাদের খুব সহজেই যে কোন অলিক বসত্মু বিশ্বাস করানো যায়। এদের স্বল্প মূল্যে সুচিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে নিয়ে আসা হয়, এরপর নানা বাহানায় টাকা নিয়ে কাল্পনিক ওষুধ দিয়ে সর্বস্বানত্ম করে ছেড়ে দেয়া হয়।
ভেষজ বা হারবালের নামে যেসব অসুখে চিকিৎসা করা হয় তার মধ্যে আছে মূলত স্বাস্থ্য ভাল করা তথা ওজন বাড়ানো, যৌন সমস্যা, হাঁপানি, বাত ব্যথা, দাঁতের চিকিৎসা, অর্শ, গেজ, ভগন্দর, হেপাটাইটিস, এইডস, ক্যান্সারের, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। মূলত দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক অসুখ যা ভাল হতে অনেক সময় লাগে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আরোগ্য হয় না, সেসব রোগই এদের লক্ষ্য। কেউ কেউ আবার এমন ওষুধও বিক্রি করে যা কিনা সর্বরোগ ভাল করে থাকে।
এসব কাল্পনিক ওষুধে যে কোন রোগ ভাল হয় না তা বলাইবাহুল্য। এসবের কোনই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং এতে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হবার সম্ভাবনাই বেশি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ওষুধ নানা রকমের শেকড় বাকড় ও লতাপাতা দিয়ে তৈরি করা হয়, হয়ত প্রসত্মুতকারী নিজেও সেসবের নাম জানে না। এসব খেয়ে অনেকেই পেটের পীড়া থেকে শুরম্ন করে যকৃত ও কিডনির মারাত্মক সমস্যায় আক্রানত্ম হন। অনেক সময় এসব ওষুধের উপাদান মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া ঘটায়, কখনও বা মারাত্মক এলার্জির মতো হয় যেখানে সমসত্ম শরীরের চামড়াই উঠে যেতে থাকে। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এসব অপচিকিৎসা করতে করতে অনেক সময় ও অর্থ খরচ হয়ে যায়। বাছবিচারহীনভাবে ওষুধ সেবনের ফলে সৃষ্ট মারাত্মক স্বাস্থ্যজটিলতা তৈরি হয়। যে অসুখ এক সময় নিরাময়যোগ্য ছিল, তা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে প্রচলিত চিকিৎসাতেও তাকে আর ভাল করা যায় না, চিকিৎসকদেরও যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বিশেষ করে ক্যান্সারের চিকিৎসায় এটা প্রায়ই দেখা যায়। আমাদের অনেকের এখনও ধারণা ক্যান্সার মানেই এর কোন চিকিৎসা নেই, তাই অনেকেই ক্যান্সার হলে আর ডাক্তারের কাছে না এসে এসব অপচিকিৎসাকারীর শরণাপন্ন হন। এতে মূল্যবান সময় অপচয় হয়। অথচ আধুনিক চিকিৎসায় অনেক ক্যান্সারই এখন পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব। শুধু সময় মতো না আসায় এদের অনেককেই আর ভাল করা যায় না। এছাড়া এসব চিকিৎসায় সর্বস্বানত্ম হয়ে যখন রোগী হাসপাতালে আসে, তখন দেখা যায় নূ্যনতম ওষুধ কেনারও সামর্থ্য নেই। এভাবে এসব হাতুড়ে চিকিৎসায় লাভ তো হয়ই না, বরং আরোগ্য লাভের পথটাও বন্ধ হয়ে যায়।
আরেকটি সমস্যা হলো চতুর প্রতারক অনেক সময় ভেষজ ওষুধের সঙ্গে প্রচলিত ওষুধও মিশিয়ে দেয়। যেমন হাঁপানির ওষুধে উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে দেয়া হয়। ফলে এসব ওষুধ খেলে রোগীর সাময়িক ভাল লাগে। কিন্তু এরা জানে না কোন রোগীকে কোন স্টেরয়েড কি মাত্রায়, কত দিন দিতে হয়, এর কি কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ফলে দীর্ঘদিন এসব ওষুধ উচ্চমাত্রায় খেয়ে অনেকেই ভয়াবহ স্বাস্থ্যসমস্যায় পড়েন। মোটা হবার জন্যও অনেকে উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড দিনের পর দিন খাওয়ান। এতে ওজন বাড়ে বৈকি, এর সঙ্গে সঙ্গে কুশিংস সিন্ড্রম নামক মারাত্মক প্রাণঘাতী রোগ দেহে বাসা বাধে, জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে রোগী মানতে বাধ্য হন যে তিনি আগেই ভাল ছিলেন। একইভাবে এরা যৌন সমস্যায় ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে, রম্নচি বৃদ্ধির জন্য দেয় পেরিএকটিন, দাঁত পরিষ্কারের জন্য দেয় হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড। এসব ওষুধের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার সম্পর্কে এদের কোন ধারণাই নেই। ফলে অপ্রয়োজনে, ভুল ওষুধ ব্যবহারে রোগীর মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়, এমনকি মৃতু্যও হতে পারে। এ কথা সত্য যে বিজ্ঞানের চরম উন্নতি এবং অত্যাধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অনেক আবিষ্কারের যুগেও এখনও অনেক রোগের কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। অনেক রোগই এখনও ভাল করা যায় না। রোগ বিমারী বেড়েই চলছে। নতুন রোগের উৎপত্তি হচ্ছে এবং বর্তমান শতাব্দীতেও অনেক রোগ চিকিৎসা শাস্ত্রকে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশ্ব জুড়েই যখন এই পরিস্থিতি, তখন কিছু ভ- অসাধু কথিত পীর দরবেশ কিভাবে ১০০ ভাগ সুস্থ করার গ্যারান্টি সহকারে চিকিৎসা দিচ্ছে?
হারবাল চিকিৎসা আমাদের দেশে স্বীকৃত। এক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞ জ্ঞানী চিকিৎসকও আছেন যারা স্বীকৃত পদ্ধতিতে কার্যকর ওষুধ দিয়ে থাকেন। সঠিক পন্থায় ব্যবহৃত আয়ুর্বেদিক বা ইউনানী জাতীয় ভেষজ ওষুধের পাশর্্বপ্রতিক্রিয়াও কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ভেষজ ওষুধ সংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে কার্যকর। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, যে কেউ কোন পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই কাল্পনিক স্বউদ্ভাবিত ওষুধকে নানা রকম চটকদার নাম দিয়ে বিভিন্ন প্রকার অসুখের মহৌষধ বলে দাবি করবেন, আর মানুষের চিকিৎসা করবেন। বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই এমন কোন চিকিৎসা কেউ করার দাবি করতে পারেন না, এতে মানুষকে বিভ্রানত্ম ও প্রতারিত করা হয়। অথচ অনেকেরই হয়ত জানা নেই যে ওষুধের প্রচারণা মেডিক্যাল নীতিমালা পরিপন্থী, প্রচলিত আইনও যা সমর্থন করে না।
অশিক্ষা কুশিক্ষা কুসংস্কার যে কাউকেই অন্ধ বানিয়ে ফেলতে পারে। আর এই সুযোগটারই ব্যবহার করছে ভ- দুর্নীতিবাজ অসাধু কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। জনগণকে অবশ্যই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে তারা যেন এসব চটকদার বিজ্ঞাপনে ভুলে গিয়ে এ ধরনের অপচিকিৎসাকারীদের কাছে ছুটে না যান। বিশেষ করে যৌনরোগ, হাঁপানি, বাতের ব্যথা, ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রেই প্রতারিত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তাই এসব রোগীকে বিশেষভাবে সাবধান থাকতে হবে। গণমাধ্যমগুলোকে শুধুমাত্র বাণিজ্যিকভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হতে হবে এবং এসব চটকদার বিজ্ঞাপনের সত্য মিথ্যা যাচাই করে নিতে হবে। এ ব্যাপারে সংশিস্নষ্ট প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মিডিয়া মানুষকে সচেতন করতে পারে। এভাবে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে মানুষকে যারা মৃতু্যর পথে ঠেলে দিচ্ছে তাদের বিরম্নদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
লেখক : ডিন, মেডিসিন অনুষদ, অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়