অল্প বয়সে ডায়াবেটিস : ফাস্ট ফুড শিশুদের ডায়াবেটিস বাড়ায়

ডায়াবেটিস শুধু বড়দের রোগ নয়, শিশুরাও এতে আক্রান্ত হয়। এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত ডায়াবেটিস প্রতিরোধের চেষ্টা করা। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের একটি বড় কারণ শিশুদের অত্যধিক ওজন বৃদ্ধি। ফাস্টফুড ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ব্যাপারেও দৃষ্টি দিতে হবে।
এত সতর্কতার পরও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই থেকে যায়। এ রোগের অন্যতম লক্ষণ হলো_ ঘনঘন প্রস্রাব। জিহ্বা শুকনো থাকার পরও ঘনঘন প্রস্রাব ডায়াবেটিসেই হয়। এছাড়া পিপাসা, বারবার ক্ষুধা বোধ, দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তি, অমনোযোগিতা, উৎসাহের অভাব ইত্যাদি হতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রথমেই পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তায় একটি খাদ্য তালিকা তৈরি করে নিন। খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ওপর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অনেকটা নির্ভরশীল।
খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সন্তানের পর্যাপ্ত শরীর চর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। শুয়ে-বসে, টিভি দেখে, কম্পিউটার গেম্স খেলে সময় কাটানোর চেয়ে বাইরের খেলাধুলার দিকে সন্তানকে আকৃষ্ট করতে হবে। এসবের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শমতো টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট এবং টাইপ-১ ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন ইনজেকশন দিতে হয়। শিশুদের ডায়াবেটিসে হঠাৎ রক্তে গল্গুকোজ কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ইনসুলিন দেওয়ার পর পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। স্কুলের শিক্ষকদেরও এ ব্যাপারে অবহিত করতে হবে। সম্ভব হলে স্কুলে একটি গল্গুকোমিটার রাখা উচিত এবং দুই-একজন শিক্ষককে রক্তে গল্গুকোজের মাত্রা দেখে ইনসুলিন প্রয়োগের পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুর খাওয়া-দাওয়া এবং জীবনাচরণে খুব বেশি কঠোরতা আরোপ করবেন না। ডায়াবেটিক শিশুর সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করুন এবং তাকে অন্য ছেলেমেয়ের সঙ্গে মিশতে দিন। যেসব শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের সঙ্গেও মিশতে দিন। ডায়াবেটিস কোনো ভয়ঙ্কর রোগ নয়। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সারাজীবন সুস্থভাবে কাটিয়ে দিচ্ছেন, এমন হাজারো দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই সন্তানের ডায়াবেটিস নিয়ে অযথা হতাশ ও উদ্বিগ্ন হবেন না।

ডা. আবু সাঈদ শিমুল

Exit mobile version