নির্বাচিত
স্ট্রোকের পর অক্ষম হয়ে পড়েন ৩৯.৪ ভাগ মানুষ
দেশে প্রায় ১.১৪ শতাংশ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং স্ট্রোকের পর তাদের ৩৯.৪ ভাগ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন না। ৪০ বছরের নিচের মানুষও স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছে, যার হার প্রায় ০.৪৬ শতাংশ। লক্ষণ প্রকাশের ৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে স্ট্রোকের রোগীকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের আলোচনায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাকি মোহাম্মদ জাকিউল আলম।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. নুরুজ্জামান খসরু, নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজেশ সাহা, ডা. নাজমুল ইসলাম জয় ও ডা. নাজমুল আলম। উপস্থিত ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সিবাত আমিন খলিল এবং সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আবু ইসহাক।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোমেন খান। তিনি বলেন, ‘স্ট্রোকের রোগীরা লক্ষণ প্রকাশের ৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আসতে পারলে আইভি থ্রম্বোলাইসিসের মাধ্যমে কার্যকর চিকিৎসা সম্ভব।’
দেশে স্ট্রোকে আক্রান্তদের চিত্র তুলে ধরে ডা. মোমেন খান আরও জানান, ‘আমাদের দেশে প্রায় ১.১৪ শতাংশ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ শতাংশে। আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, এখন অল্পবয়সী, অর্থাৎ ৪০ বছরের নিচের মানুষও স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছে, যার হার প্রায় ০.৪৬ শতাংশ। সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে যে, বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান কারণ স্ট্রোক এবং স্ট্রোক-পরবর্তী অক্ষমতায় প্রায় ৩৯.৪ শতাংশ মানুষ ভোগে।’
স্ট্রোকের প্রধান কারণ হিসেবে উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া ও ধূমপানের কথা উল্লেখ করেন।
বক্তারা স্ট্রোক প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন পরিহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। র্যালিটি ক্যাম্পাস ঘুরে সচেতনতা বার্তা প্রচার করে।
দিনব্যাপী আয়োজনে স্ট্রোক প্রতিরোধ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এসব কর্মসূচি স্ট্রোক বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।