নির্বাচিত

দেশে ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Published

on

উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ কয়েকটি রোগ দেশের ৭০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন অসংক্রামক রোগে বেশি মারা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সীরা।

বুধবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ সম্মেলনের প্রথম দিন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে- এমন তিনজনের একজন মানুষ জানে না, তিনি কিডনি রোগে ভুগছেন। দেশে ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জনই জানে না তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। আবার যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের অর্ধেকের বেশি জানেন না রোগটি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আক্রান্তদের প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৭৭ জন ওষুধ খাচ্ছে, কিন্তু তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই।

প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ সম্মেলনের সদস্য সচিব ডা. শামীম হায়দার তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, ৩৫ বছরের উপরে ৫০ শতাংশ মানুষের উচ্চ রক্তচাপ আছে।

“দেশে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারসহ কয়েকটি রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। যারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত, তাদের চিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রতিরোধের উপর জোর দিতে হবে। এ প্রতিরোধের জন্য আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।”

Advertisement

আইসিডিডিআরবি’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আলিয়া নাহিদ বলেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের কতজনের উচ্চ রক্তচাপ আছে তা খুঁজলে দেখা যাবে ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জনই জানে না তারা এই রোগে আক্রান্ত। প্রাথমিকভাবে মানুষ ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকার কথা শুনতে পারেন বা পরীক্ষা করে দেখেন।

“তখন থেকেই ওষুধ খাওয়া শুরু করে কিন্তু চিকিৎসকের কাছে যায় না। এ কারণে দেশে অসংক্রামক ব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত সবার মধ্যেই জ্ঞানের অভাব রয়েছে। সবাই মনে করে অসুখটা ধরা পড়ার পরে অসুখটা হয়েছে। কিন্তু অসুখটা ধরা পড়ছে শেষ সময়। তারপর থেকে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে হবে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ওষুধ খেতে হবে। অর্থাৎ আমাদের অসুখটা হওয়ার আগেই ডায়াগনোসিস করতে হবে।”

সম্মেলনে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উদ্বেগের কারণ হচ্ছে। এনসিডি প্রতিরোধে সরকার নানা কর্মসূচি নিয়েছে।

“দেশের আট বিভাগে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও আইসিই বেড স্থাপন করা হচ্ছে। উপজেলা হাসপাতালসহ দেশের সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করা হয়েছে। পাশাপাশি মানুষের এনসিডি প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

সম্মেলনে যুক্ত হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, “অসংক্রামকব্যাধির কারণে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

“তামাকের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে এনসিডি বাড়ছে। যারা এনসিডিতে ভুগছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পর্যায়েও তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এনসিডি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।”

Trending

Exit mobile version