নির্বাচিত

টানা ১৯ দিনের ছুটিতে বাংলাদেশ!

Published

on

ঈদুল আজাহা এবং পরবর্তী বিধি-নিষিধে কার্যত টানা ১৯ দিনের ছুটিতে পড়ছে বাংলাদেশ। ঈদের ছুটি, সাপ্তাহিক ছুটি এবং করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘোষিত বিধি-নিষিধে দুই সপ্তাহের বেশি বন্ধ থাকছে অফিস, গণপরিবহন ও শপিংমল।

সরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের পরে ভার্চ্যুয়াল অফিস করার নির্দেশনা থাকলেও বেসরকারি চাকরিজীবীরা মূলত আগস্টের পুরো প্রথম সপ্তাহ ছুটি কাটাতে পারছেন।

আগামী বুধবার (২১ জুলাই) দেশে পবিত্র ঈদুল আজাহা উদযাপিত হবে। ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (২০ জুলাই)। ঈদের তিন দিন (২০, ২১ ও ২২ জুলাই) ছুটি শেষে ২৩ ও ২৪ জুলাই সাপ্তাহিক (শুক্র ও শনিবার) ছুটি। ফলে ঈদের ছুটি মিলে টানা পাঁচ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সবাই।

অন্যদিকে, করোনা সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকেই আবার শুরু হচ্ছে বিধি-নিষেধ। এই বিধি-নিষেধ চলবে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত। অর্থাৎ মোট ১৪ দিন থাকছে বিধি-নিষেধ। এই বিধি-নিষিধে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হবে। বন্ধ থাকবে সব শিল্প কারখানা এবং গণপরিবহন।

আগামী ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার পরদিন শুক্র ও শনিবার (৬ ও ৭ আগস্ট) সাপ্তাহিক ছুটি। সাপ্তাহিক ছুটিতে সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ বেসরকারি অফিস খোলা থাকে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে মূলত ঢাকা ত্যাগ করা মানুষদের আসার সুযোগ রেখে ৮ আগস্ট থেকেই শুরু হবে বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম।

Advertisement

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত ১ জুলাই কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৪ জুলাই। এই বিধি-নিষিধে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ থাকে সব শিল্প কারখানা এবং গণপরিবহন।

এরপর ঈদুল আজাহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধি-নিষিধে শিথিল করা হয়।

ঈদের তৃতীয় দিন ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত আরোপিত বিধি-নিষিধে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হবে। বন্ধ থাকবে সব শিল্প কারখানা এবং গণপরিবহন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, ঈদের পর বিধি-নিষেধ তথা লকডাউন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। শিল্প কারখানাও বন্ধ রাখা হবে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের পরের বিধি-নিষিধে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১৩ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

Advertisement

করোনা সংক্রমণ রোধে এসব উদ্যোগ নেওয়া হলেও ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। গত কয়েকদিন থেকে বাড়িমুখী মানুষের স্রোত নেমেছে। গত ১৫ ও ১৬ জুলাই ১৭ লাখ সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস শেষে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষের গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে, ২১ জুলাই ঈদ শেষে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় বাড়ি ফেরত মানুষের অধিকাংশই ঈদের দিন এবং পর দিন ঢাকায় ফিরবেন, ফলে ঢাকা ছাড়ার সময় যে সংক্রমণের আশঙ্কা তা ফেরার সময় আরও মারাত্মক হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ঈদে পশুরহাট বসানোয় এই আশঙ্কা আরও মারাত্মক আকারে দেখা দিয়েছে।

যদিও বিধি-নিষিধে আরও চারদিন শিথিলের দাবি তোলা হয়, কিন্তু তা সরকারের পক্ষ থেকেও নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় নিজেদের সুরক্ষায় মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সংক্রমিত হওয়া থেকে মুক্তির পরামর্শ এসেছে। তবে ঈদের আগেই সবশেষ ১৯ জুলাই ২৩১ জনের মৃত্যু এবং ১৩ হাজার ২৩১ জনের সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; যা অত্যন্ত উদ্বেগ, শঙ্কা এবং ভয়াবহতার ইঙ্গিত!

Advertisement

Trending

Exit mobile version