প্রধান খবর

বায়ুদূষণে বাংলাদেশ ২০২৩ সালে শীর্ষে ছিল

Published

on

বায়ুদূষণ বিশ্বজুড়ে এক মহামারি আকার ধারণ করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ—বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতে এই দূষণ আরও বেশি। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তলানিতে। অর্থাৎ, বিশ্বে গত বছর সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয়েছে বাংলাদেশে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার আইকিউএয়ার বায়ুদূষণের ওপর ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট-২০২৩ ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে পাকিস্তান দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে এবং আফ্রিকার দেশ চাদ ও ইরানকে হারিয়ে যথাক্রমে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে বাংলাদেশ ও ভারত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-২.৫-এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। এই পিএম-২.৫ বাতাসাবাহিত ও এটি মানুষের ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি করে। সাধারণত, কোনো স্থানের বাতাসে পিএম-২.৫-এর পরিমাণ ৫ মাইক্রোগ্রাম হয়ে গেলেই সেটিকে দূষিত বলে বিবেচনা করা হয়। পাকিস্তানের বাতাসের প্রতি ঘনমিটারে এই কণার পরিমাণ ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি সায়েন্স ম্যানেজার ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোয়েডার দক্ষিণ এশিয়ার এই তিন দেশে ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘ (দক্ষিণ এশিয়ার) জলবায়ু পরিস্থিতি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে অঞ্চলটিতে পিএম-২.৫-এর ঘনত্ব আকাশ ছুঁয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় কারণ হলো দূষণ পদার্থের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’

শ্রোয়েডার আরও বলেন, ‘এ ছাড়া বায়ুদূষণের অন্যান্য কারণ হলো—দেশগুলোর কৃষিব্যবস্থা, শিল্পায়ন ও জনসংখ্যার ঘনত্ব।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো, একটি ভালো অবস্থানে যাওয়ার আগে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকা বাংলাদেশের অবস্থান তলানির দিক থেকে ছিল পঞ্চম এবং ভারতের অবস্থান ছিল অষ্টম। এবার দুটি দেশ বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে। বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ ফিরোজ খান রয়টার্সকে বলেছেন, বাংলাদেশে অকালমৃত্যুর ২০ শতাংশই হয় বায়ুদূষণজনিত রোগের কারণে। বায়ুদূষণ-সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায়ে দেশের জিডিপির অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাংশ ব্যয় হয়ে যায়।

এই তালিকায় কম বায়ুদূষণের দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রানাডা, আইসল্যান্ড, মরিশাস ও নিউজিল্যান্ড। ২০২৩ সালজুড়ে এই দেশগুলোর বায়ুতে গড়ে দূষক কণা তথা পিএম-২.৫ কণার পরিমাণ ৫ মাইক্রোগ্রামের নিচে ছিল।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশ শাদকে এবার তথ্যের অপ্রাপ্যতার কারণে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর ইরান নিজেদের এই তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

Trending

Exit mobile version