উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকা সত্বেও দীর্ঘ ৮ বছরেও মৌলভীবাজার কমলগঞ্জে সিলেট বিভাগের একমাত্র ভেষজ বাগান আরোগ্যকুঞ্জে ভেষজ উদ্ভিদ চাষাবাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়নি। যে টুকু আছে পরিচর্যার অভাবে তাও হারিয়ে যাচ্ছে।
রাতের আধারে এক শ্রেণীর অসাধু কবিরাজ গাছ শুদ্ধু কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অতচ এ আরগ্য কুঞ্জকে একটি মডেল ভেষজ বাগান হিসেবে রুপ দিয়ে এর মাধ্যমে সারাদেশে গড়ে উঠতে পারে আরো অনেক ভেষজ বাগান।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া বনের বাঘমারা এলাকায় ২০০২ সালে দুই একর ও ২০০৩ সালে আড়াই একর বন বিভাগের জমিতে গড়ে তুলা হয় ভেষজ বাগান আরোগ্য কুঞ্জ।
তবে আরগ্য কুঞ্জ সৃষ্টির পর নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে অশিভাগ গাছই বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেলেও আরোগ্য কুঞ্জের কোন গাছে নাম লেখা না থাকায় পর্যটকরা গাছের পরিচয় জানতে পারেননা।
অন্যদিকে আরগ্য কুঞ্জ রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সরকারের কোন বরাদ্দ না থাকায় বন বিভাগ এর কোন উন্নয়ন কাজ করতে পারছেনা। লোকবলের অভাবে সব সময় দেখাশোনা করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। সে সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু চক্র কেটে নিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি ঔষদী গাছ। এক সময় বাংলাদেশের প্রায় সব গ্র্রামাঞ্চলেই এ সকল ভেষজ ঔষদের গাছ পাওয়া যেতো।
বর্তমানে তা বিলুপ্তীর পথে ।
আদি অকৃত্রিম ভেষজ চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষকে উৎসাহিক করে তোলার উদ্যেশ্যে সিলেট বন বিভাগ দেশজ ঔষধী বৃক্ষ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে “আরোগ্য কুঞ্জে” অশোক, অর্জুন, কর্পুর, চালতা, নিম, চালমুগরা, রক্ত চন্দন, খয়ের, নাগেশ্বর সহ ৩৮ টি প্রজাতির বৃক্ষ বাসক, আকন্দ, পাখরকুঁচি, ভেরেন্ডা,
ঘৃত কুমারী, উলটকমল, তুলসী, ফনিমনসাসহ ১২ প্রজাতির গুল্ম জাতীয় এবং ঈশ্বরমুল, কালোমেঘ, গন্ধভাদুলী, গোল মরিচ, থনকুনি, পুদিনা, শথমুলী, সর্পগন্ধা, হাড়মোড়, কুমারিকা সহ ১৩ প্রজাতীর লতা জাতীয় গাছ-গাছালি সহ “আরোগ্য কুঞ্জে” লাগানো হয়েছিল ৬৯ প্রজাতির ভেষজ গাছ।
এসব গাছ বা লতাগুল্মের ছাল, ফল, ফুল, মূল, পাতা, শিকড়, বীজ, কষ, নির্যাস দিয়ে তৈরী করা ভেষজ ঔষুধ দিয়ে স্ত্রী রোগ, পেটের পীড়া হৃদ রোগ, অর্র্শ চর্মরোগ্য, কুষ্ট, ম্যালেরিয়া, পিত্তশ্বর, শান্ডু, বহুমুত্র, বাতজ্বর, ডিপথেরিয়া, হাপানি, যক্ষা, গোদ, স্নাযু রোগ সহ ৪০/৫০ ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়।
বনবিভাগ ও দেশের চা বাগান সমূহের অব্যবহৃত ভুমিতে এই কার্যক্রম যথাযথ ভাবে সম্প্রসারিত করে একদিকে যেমন গরীব জনগণের স্বল্প খরচে সু- চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে অন্যদিকে প্রতি বছর এইসব ঔষধি গাছ গাছড়া আমদানির জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় তা সাশ্রয় হবে। এছাড়াও বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশের মুল্যবান এ সকল ভেষজ সম্পদ।
আর যার মাধ্যমে আবারও ছড়িয়ে যাবে আমাদের গ্রামে গঞ্জে। তাই উল্লেখিত বিষয় বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সিলেট বিভাগের এ একমাত্র ভেষজ বাগান আরোগ্য কুঞ্জের সব ভেষজ গাছে নাম লিখে রাখা ও চুরদের হাত থেকে রক্ষা করা।